Search

শিক্ষা

বিষয় ৩: জল ও আত্মার সুসমাচার

[3-22] আমরা যারা সর্বদা পাপ করি, আমাদের জন্য প্রভুর ধার্মিকতা একান্তই প্রয়োজনীয় (মথি ৯:৯-১৩)

আমরা যারা সর্বদা পাপ করি, আমাদের জন্য প্রভুর ধার্মিকতা একান্তই প্রয়োজনীয়
< মথি ৯:৯-১৩ >
“আর সেই স্থান হইতে যাইতে যাইতে যীশু দেখিলেন, মথি নামক এক ব্যক্তি করগ্রহণ-স্থানে বসিয়া আছে; তিনি তাহাকে কহিলেন, আমার পশ্চাৎ আইস। তাহাসে সে উঠিয়া তাঁহর পশ্চাৎ গমন করিল। পরে তিনি গৃহমধ্যে ভোজন করিতে বসিয়াছেন, আর দেখ, অনেক করগ্রাহী ও পাপী আসিয়া যীশুর এবং তাঁহার শিষ্যদের সহিত বসিল। তাহা দেখিয়া ফরীশীরা তাঁহার শিষ্যদিগকে কহিল, তোমাদের গুরু কি জন্য করগ্রাহী ও পাপীদের সহিত ভোজন করেন? তাহা শুনিয়া তিনি কহিলেন, সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই, বরং পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে। কিন্তু তোমরা গিয়া শিক্ষা কর, এই বচনের মর্ম কি, “আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়”; কেননা আমি ধার্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকে ডাকিতে আসিয়াছি।”
 
 
সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই
 
আজকের শাস্ত্রাংশটি আমাদের সামনে একটি দৃশ্য তুলে ধরেছে, যেখানে যীশু মথি নামে একজন করগ্রাহীর বাড়িতে খেতে বসেছিলেন, আর এই রকম পাপীদের সাথে খাবার জন্য ফরীশীরা তাঁর বচসা করছিল। তখন আমাদের প্রভু তাদেরকে বললেন, “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই” (মথি ৯:১২)। 
এখানে মূল বিষয়টি হলো ফরীশীদের দৃষ্টিভঙ্গি ও যীশুর দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্য। ফরীশীদের দৃষ্টিতে যীশু এবং তাঁর শিষ্যেরা পাপীদের সাথে খেতে বসেছিল, যা তাদের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল। তখনকার ফরীশীরা ভাবত যে, শিষ্যদের জীবন-ধারা থেকে তাদের জীবন-ধারা ছিল অনেক উত্তম। তারা প্রশ্ন তুলেছিল যে, যীশু, যিনি “একজন নামকরা শিক্ষাগুরু,” তিনি কি করে একজন করগ্রাহীর সাথে খাওয়ার চিন্তা করলেন। করগ্রাহীদেরকে তারা দেশের স্বদেশদ্রোহী বলে মনে করত। আজকে মথি নামে যে করগ্রাহীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি আজকে যেমন রাজস্ব অফিস আছে, সেখানে কাজ করতেন। আর সেই সময়ে ইস্রায়েলরা ভাবত যে, করগ্রাহীরা অনেক বেশি কর নিয়ে লোকদের রক্ত চুষে জীবন ধারণ করছে। কিন্তু যীশু এবং তাঁর শিষ্যেরা মথি নামে এক করগ্রাহীর বাড়িতে গেলেন এবং তার ও তার বন্ধদের সাথে খেতে বসলেন। ফরীশীর এই কারণেই যীশু এবং তাঁর শিষ্যদের বচসা করেছিল।
কিন্তু, সত্যিটা হলো- আমাদের প্রভু পাপীদের জন্যই এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। প্রভু একজন পাপীর গৃহে গেলেন এবং তাদের সাথে খাবার খেলেন, কারণ তিনি পাপীদের পরিত্রাণ করতেই এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। কিন্তু ফরীশীদের মত ছিল ভিন্ন। তারা কি সেই রকম ছিল না? তারা কি ভাবেনি যে, প্রভু পাপীদের পরিত্রাণ করতে এবং তাঁর শিষ্য বানাতে চেয়েছিলেন? 
আজকের বাক্যাংশে আমরা দেখি, প্রভু ফরীশীদেরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলছেন। তিনি বলছেন, “তাহা শুনিয়া তিনি কহিলেন, “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই, বরং পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে’” (মথি ৯:১২)। প্রিয় সহ-বিশ্বাসীগণ, যীশুর দৃষ্টিতে মথি এবং ফরীশী, সবাই পাপী ছিল। প্রভুর দৃষ্টিতে তারা সবাই পাপী ছিল। সমস্ত মানবজাতিই অক্ষম এবং দূর্বল, আর তারা সারাটা জীবন ধরেই পাপ করে। আর যদি এটাও যথেষ্ট না হয়, তাহলে এটা অনন্ত সত্য যে, তারা জন্ম থেকেই পাপী। এইজন্য আমাদের যীশু ত্রাণকর্তাকে প্রয়োজন। কিন্তু ফরীশীরা যীশুকে এবং মথিকে কোন চোখে দেখেছিল? যখন তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করত, তখন তারা একটা মানুষকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখত? ধর্ম পালনকারীরা নিজেদেরকেই ঠিকমতো চিনে না, আর তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে সর্বদা তাদের নিজস্ব ধার্মিকতার দম্ভ করে। ধর্মীয় লোকেরা যীশুর সাক্ষাতে সর্বদা নিজেদের গুণাবলীর দম্ভ করতে চেষ্টা করে। এই জন্যই ধর্ম পালনকারী, অর্থাৎ ফরীশীদের এবং যীশুর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ বিপরীত।
ফরীশীরা যীশু, যিনি নিজেই ঈশ্বর, তাঁর সাক্ষাতে নিজেদের ধার্মিকতা দেখাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যীশু তাদের বললেন যে, তাদের সবারই পরিত্রাণের দরকার ছিল, কারণ তারা সবাই মথির মতো মিথ্যা বলেছিল এবং লোভ করেছিল। যীশু শুধু করগ্রাহী মথিকেই পাপী বলে গণ্য করেননি, যিনি তার দেশের সর্বসাধারণের দৃষ্টিতে পাপী ও দেশদ্রোহী ছিলেন; কিন্তু ফরীশীদেরকে পাপী বলে গণ্য করেছিলেন। যে করগ্রাহীরা রোমান সম্রাটের জন্য নিজের লোকদের কাছ থেকে কর আদায় করত, তারা নিজেদের জন্যও লোকদের কাছ থেকে বেশি করে কর আদায় করত। যীশুর দৃষ্টিতে শুধু এরাই পাপী ছিল না। এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করা প্রত্যেক মানুষই পাপী। এইজন্য যীশু বলেছেন, “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই, বরং পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে।” অর্থাৎ যীশু আপনার এবং আমার কথাই বলছিলেন। তিনি বলছিলেন যে, আমরা আমাদের সমগ্র জীবন জুড়েই পাপ করি। 
যীশু এখানে বলেছেন যে, পীড়িত লোকদেরই চিকিৎসকের প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের সকলেরই্ যীশুকে প্রয়োজন, কারণ আমরা প্রত্যেকেই পাপী। আমরা এমন মানুষ, যারা সব সময়ই দূর্বল, আর আমরা সব সময় করগ্রাহী মথির মতো পাপ করি। প্রভুর দৃষ্টিতে প্রত্যেকেই পাপী। প্রত্যেকেই জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত পাপ করে, তাই প্রত্যেকেই পাপী। 
যাইহোক, যারা নিজেদেরকেই জানে না, তারা মথির মতো একজনকে কিভাবে দেখে? তারা মথিকে এমনভাবে দেখে যে, “এই লোকের সাথে আমরা অবশ্যই মিশব না।” তারা কি এভাবেই চিন্তা করে না? কিন্তু যীশুর দৃষ্টিতে আমরা বাস্তবিকই মথির চেয়ে আলাদা লোক নই। আমরাও তার মতোই সব সময় পাপ করি। আমরা এমন মানুষ, যারা জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ না করে থাকতে পারে না। এইজন্যই প্রভু বলেন যে, যারা পীড়িত, তাদের যীশুর মতো একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন। যীশুর দৃষ্টিতে আমরা সবাই একই ধরণের পাপী। মানুষ জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ করে, কিন্তু ফরীশীরা মনে করে যে, তারা মথির মতো পাপী লোকের চেয়ে ভিন্ন। যাইহোক, তিনি চান যেন আমরা সকলেই তাঁর অনুগ্রহ যাচ্ঞা করি। আমাদের প্রভু চান, আমরা যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহ যাচ্ঞা করি। প্রভু চান সমগ্র মানবজাতির মধ্যে এমন একটা অন্তঃকরণ থাকুক, যা ঈশ্বরের অনুগ্রহ যাচ্ঞা করে। যারা ঈশ্বরের কাছে অনুগ্রহ যাচ্ঞা করে, যারা অন্তর থেকে ক্রন্দন করে বলে যে, “ঈশ্বর প্রভু, আমাকে দয়া করুন। আমি আমার জন্মের পর থেকেই একটা উত্তম জীবন যাপন করতে চেয়েছি, আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু আমি বারংবার পাপে পতিত হয়েছি। আমি সব সময়ই পাপ করি। প্রভু, দয়া করে আমাকে অনুগ্রহ করুন এবং আমাকে আমার সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করুন। প্রভু, তুমি কি করে আমাকে আমার সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করেছো?” তাদেরকে প্রভু জল ও আত্মার সুসমাচার দান করতে চান।  
প্রভু চান, আমরা তাঁর কাছ থেকে এভাবে অনুগ্রহ যাচ্ঞা করি। প্রভুর দৃষ্টিতে, আমাদের উচিৎ তাঁর অনুগ্রহ যাচ্ঞা করা এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে পাপ ক্ষমা লাভের প্রকৃত উপায় অন্বেষণ করা। যীশু খ্রীষ্টের কাছে মানবজাতিকে এটাই যাচ্ঞা করতে হবে। আমাদেরকে অর্থাৎ মানবজাতিকে সর্বান্তঃকরণে এটা উপলব্ধি করতে হবে যে, আমরা এই পৃথিবীতে জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ করি। এরপর আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, প্রভু আমাদেরকে, পাপে-পীড়িতদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করেছেন। মথি যিনি ভগ্ন-চূর্ণ অন্তঃকরণ নিয়ে প্রভুর কাছে পাপের পরিত্রাণ যাচ্ঞা করেছিলেন, প্রভু এই রকম লোককেই সাক্ষাত করতে চেয়েছিলেন। ঈশ্বর এই মানুষের অন্তর দেখতে চেয়েছিলেন, যে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা তাঁর সাহায্য যাচ্ঞা করেছিল। কারণ, তার মধ্যে অনেক অযোগ্যতা ছিল, আর তার মধ্যে কোন ধার্মিকতা ছিল না। এইজন্য, আমাদের প্রভু বলেছেন, “কেননা আমি ধার্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকে ডাকিতে আসিয়াছি।”
ঈশ্বর কোন ধরণের মানুষকে তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ করতে চান? আর কোন ধরণের লোকদেরকে ঈশ্বর অনন্ত জীবনও দান করতে চান? যারা সর্বান্তঃকরণে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তাদেরকে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন দানের জন্যই প্রভু এই জগতে নেমে এসেছিলেন। যারা বলে যে, তারা পাপ করেনি, আর যারা নিজেদের চেষ্টায় পবিত্র জীবন যাপনের চেষ্টা করে, তাদেরকে পরিত্রাণ করার জন্য প্রভু এই জগতে আসেননি। বরং, প্রভু তাদেরকে ডাকতে ও পরিত্রাণ করতে এসেছিলেন, যারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা যথাযথভাবে পালন করতে পারেনি। আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, প্রভু আমাদের মতো অযোগ্য, দূর্বল এবং অধার্মিক লোকদেরকে ডাকতেই এই পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন। আর আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, তিনি আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। এইজন্যই প্রভু বলেছেন, “কেননা আমি ধার্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকে ডাকিতে আসিয়াছি” (মথি ৯:১৩)। 
এটা ঠিক এই রকমই। প্রভুর দৃষ্টিতে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের কোন ধার্মিকতা নেই। কিন্তু আমরা আমাদের মরণ দিন পর্যন্ত পাপ করে যাবো, আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা পরিত্রাণ করার জন্য প্রভু এই জগতে নেমে আসলেন। “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই, বরং পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে,” প্রভুর এই বাক্যানুসারে আমাদেরকে অর্থাৎ সমস্ত মানবজাতিকে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা অবশ্যই পরিত্রাণ লাভ করতে হবে। আমরা জন্ম থেকে মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ করি, তাই আমাদের প্রভু-প্রদত্ত জল ও আত্মার সুসমাচারের প্রয়োজনীয়তা আছে। যদি আমরা নিজেরাই ধার্মিক জীবন যাপন করতে পারতাম, তাহলে আমাদের আত্মিক চিকিৎসকের প্রয়োজন ছিল না, আর আমাদের প্রভু-প্রদত্ত জল ও আত্মার সুসমাচারের প্রয়োজনও হতো না। একজন অসুস্থ লোকের যেমন একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন, তেমনি পাপ-পীড়িত মানুষ হিসেবে আমরা বলতে পারি না যে, আমাদের প্রভুর প্রয়োজন নেই, যিনি জল ও আত্মার সুসমাচার প্রকাশ করেছেন। প্রভুর দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রত্যেক মানুষেরই প্রভুর অনুগ্রহের প্রয়োজন আছে। মানুষ এতই দূর্বল যে, তারা সব সময় অক্ষম, অযোগ্য এবং সব সময় পাপ করে।   
যাইহোক, আমাদের প্রভুর সাক্ষাতে ব্যবস্থাবেত্তারা কেমন? তারা প্রভুর কাছে অনুগ্রহ যাচ্ঞা না করে উল্টো প্রভুর কাছে এসে তাদের নিজস্ব ধার্মিকতার দম্ভ দেখাতে চেষ্টা করে। তারা দাবী করে যে, তারা অন্যান্য পাপীদের থেকে আলাদা। তারা মনে করে যে, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না, তাদের থেকে তারা মৌলিকভাবেই আলাদা। আর এই কারণেই ব্যবস্থাবেত্তারা প্রভুর অনুগ্রহ লাভ করতে পারে না। ফলোশ্রুতিতে, তারা নিজেদের সাথে সাথেই নিজেদের সমস্ত পাপ বহন করে এবং নিজেদেরকে নরকে নিয়ে যায়।
এই দন্ড থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, আমাদের সমগ্র জীবনে আমাদের কোন ধার্মিকতা নেই, আর আমাদের এমন মানুষ হতে হবে, যারা ঈশ্বর-প্রদত্ত জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে। যে ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্বীকার করে যে, সে একজন পাপী; এবং যে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, এবং অন্তরে ঈশ্বরের অনুগ্রহের জন্য তীব্র আকাঙ্খা ধারণ করে, সে ঈশ্বর থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। যে প্রভুর ধার্মিকতা জানে, সে প্রকৃত পরিত্রাণ লাভ করতে পারে, এবং হৃদয়ে ঈশ্বরের এই বাক্য গ্রহণ করতে পারে যে, প্রভু সত্যি সত্যিই জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। তাই, যারা শুধুমাত্র ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে এবং তাঁতে নির্ভর করে, শুধুমাত্র তারাই তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। ঈশ্বর এই রকম লোকদের বিশ্বাস দেখেন এবং তাঁদেরকে পরিত্রাণ দান করেন। যারা ইতোমধ্যেই জল ও আত্মার সুসমাচারে, অর্থাৎ প্রভুর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করেছে, তারা বিশ্বাসে তাদের পরিত্রাণ লাভ করেছে। 
 
 

মানবজাতির প্রতি মুহূর্তের জন্য সুসমাচার, অর্থাৎ প্রভুর ধার্মিকতা দরকার

 
আমরা সপ্তায় ৭ দিন, দিনে ২৪ ঘন্টা পাপ কর। তাই আমাদের পুরো জীবন ধরেই প্রতি মুহূর্তে, প্রতি দিনে, প্রতি সপ্তায়, প্রতি মাসে প্রভুর ধার্মিকতার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের সর্বদা প্রভুর অনুগ্রহের দরকার রয়েছে, যিনি এই জগতে এসেছিলেন, এবং যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। আমাদের সর্বদা পরিত্রাণের অনুগ্রহ দরকার রয়েছে; যে পরিত্রাণ প্রভু ক্রুশের উপরে আমাদের পাপের দন্ড ভোগের দ্বারা সাধন করেছিলেন। প্রভুকে ক্রুশে দন্ড ভোগ করতে হয়েছিল, কারণ তিনি যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজের দেহে তুলে নিয়েছিলেন। কেন আমাদের প্রতিটি মুহূর্তে পরিত্রাণের অনুগ্রহ দরকার রয়েছে? কারণ, আমরা, মানুষরা সর্বদা পাপ করি, এবং আমরা অধম। আত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি এবং আমি, আমরা সবাই অসুস্থ, তাই আমাদের প্রতিদিন প্রভুর অনুগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা অক্ষম, তাই আমাদের সর্বদা প্রভুর ধার্মিকতার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পাপ মোচনের জন্য প্রভু বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন, এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, এবং এভাবে আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছিলেন। এইজন্য, আমাদের প্রতিদিন এই অনুগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা অবশ্যই সর্বদা প্রভু-প্রদত্ত পরিত্রাণের অনুগ্রহের মধ্যে থাকব। এই পৃথিবীতে থাকাকালীন আজকে, আগামীকালকে এবং প্রতিদিন সব সময়ের জন্য আমাদের পরিত্রাণের অনুগ্রহের দরকার রয়েছে। এই পরিত্রাণের অনুগ্রহ প্রভু আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা দিয়েছিলেন। 
আজকে মন্ডলীতে আমাদের মধ্যে এক ভাই উপস্থিত আছেন, যিনি দুই বছর সশস্তবাহিনীতে কাজ করার পর মাত্রই মন্ডলীতে এসেছেন। যেখানে ঈশ্বরের মন্ডলী নেই, সে সমস্ত জায়গায় থাকার সময় এই রকম যুবক ভাই অনেক ধরণের পাপে পড়তে পারে। এই রকম সময়ে, এই যুবক ভাইদের প্রভুর অনুগ্রহের দরকার রয়েছে, যিনি এই জগতে এসে যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা এবং ক্রুশারোপিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন। যে লোকেরা এখন ঈশ্বরের মন্ডলীতে আছে, তাদেরও প্রতিদিন পরিত্রাণের অনুগ্রহের দরকার রয়েছে। আপনি এবং আমি অক্ষম, তাই আমাদের প্রভু নিজেই আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য তুলে নিয়েছিলেন এবং সেই পাপের জন্য দন্ড ভোগ করেছিলেন। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনাদের প্রতিদিন প্রভুর অনুগ্রহের প্রয়োজন আছে কি নেই? আপনাদের এটা প্রতিদিন দরকার রয়েছে। আমাদের যাদের প্রতিদিন তাঁর অনুগ্রহের দরকার রয়েছে, আমাদেরকে প্রভু পরিত্রাণ করেছেন।  
 
 

যাইহোক, কিছু মানুষ প্রভুর কাছে অনুগ্রহ চাওয়ার পরিবর্তে নিজেদের আত্মধার্মিকতার দম্ভ দেখাতে আসে

 
ব্যবস্থাবেত্তারা প্রভুর কাছে আসে যেন তাদের ভাল কাজের বিষয়ে অনবরত দম্ভ করতে পারে, তারা বলে, “প্রভু, আমি এই সপ্তায় অনেক ভাল কাজ করেছি। আমি এই সপ্তায় তিন বার স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেছি। আমি এই সপ্তায় অনেক অর্থ দান করেছি, দশমাংশ দান করেছি, ধন্যবাদের অনেক দান দিয়েছি, এবং তোমার বিষয়ে অনেক সাক্ষ্য দিয়েছি।” তারা যখনই প্রভুর সাক্ষাতে আসে, তাদের আত্মধার্মিকতা দেখাতে শুরু করে। 
যাইহোক, যারা প্রভুর প্রেম প্রকৃতরূপে জানে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে, যারা জানে এবং বিশ্বাস করে যে, প্রভু জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন এবং তাদের অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হয়েছেন, তাদের বিষয়টি কেমন? তারা এই ব্যবস্থাবেত্তাদের মতো নয়, কিন্তু তারা যখনই ঈশ্বরের সাক্ষাতে আসে, যখনই প্রার্থনা করে, এবং যখনই আরাধনা করে, তখন ঈশ্বরের অনুগ্রহ যাচ্ঞা করতে শুরু করে। তারা নত-নম্র হয়ে প্রভুর সাক্ষাতে আসে, কারণ তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজেদের ভুল-ভ্রান্তির বিষয়ে জানে। এইজন্য, এই লোকেরা প্রভুর উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতার গান গায়, এবং গানের সেই কথাগুলো নিয়ে চিন্তা করে, আর তারা উপলব্ধি করে যে, ঈশ্বর সত্যিই তাদের অনুগ্রহ করেছেন। তারা প্রভুকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে, যিনি তাদেরকে সত্যি সত্যি পরিত্রাণ করেছেন; আর তারা জল ও আত্মার সুসমাচার রোমন্থন করে। আর এমনটা করে তারা আত্মিকভাবে নতুন শক্তি লাভ করে। ঈশ্বরের ধার্মিকতার প্রশংসা করে তারা আত্মিকভাবে নতুন শক্তি লাভ করে, এবং সেই শক্তি নিয়ে ফিরে গিয়ে প্রভুর নিযুক্ত কার্য করে।
তাহলে আপনার বিষয়টি কেমন? আপনি কি এই ব্যবস্থাবেত্তাদের দলে নাকি অন্য দলে? যারা প্রভু-প্রদত্ত পরিত্রাণের সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারা প্রভুর অনুগ্রহ অন্বেষণ করে। এই লোকেরা প্রভুকে সন্তুষ্ট করে। যারা এইভাবে চলে, তারা প্রভুর অনুমোদিত মানুষ। মাঝে-মধ্যে কিছু সময় আসে, যখন আমরা আত্মধার্মিকতায় অন্ধ থাকি এবং প্রভুর সাক্ষাতে আসি। আর কিছু সময় আসে, যখন আমরা পবিত্র আত্মায় পূর্ণ থেকে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আসি। যাইহোক, আপনার এবং আমার অবস্থা দিনের প্রত্যেক সময় এই রকম থাকে না। এখানে যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হল- যারা প্রভুর ধার্মিকতা ও প্রেম জানে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে, এবং ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করে, প্রভু তাদের উপর সন্তুষ্ট হন। ঈশ্বর এই রকম লোকদের গ্রহণ করেন। 
 
 

আমরা সবাই পাপে-পীড়িত আত্মা ছিলাম

 
আমাদের প্রভু পাপে-পীড়িত লোকদের পরিত্রাণের বিষয়ে বলেছেন, তিনি বলেছেন, “সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নাই, বরং পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে।” আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমরা কি প্রভুর সাক্ষাতে পাপে-পীড়িত মানুষ ছিলাম? আপনি এবং আমি কি প্রভুর সাক্ষাতে উত্তম নাকি পাপে-পীড়িত মানুষ ছিলাম? আমরা সবাই পাপে-পীড়িত মানুষ ছিলাম। অর্থাৎ, আমরা সবাই অধম মানুষ ছিলাম।
সমগ্র পৃথিবীর সমস্ত খ্রীষ্টানরা অবশ্যই নিজেদের আত্মধার্মিকতার অহংকার করবে না, এবং প্রভুর সাক্ষাতে তা অবশ্যই দেখানোর চেষ্টা করবে না। আমি চাই না, তারা নিজের আত্মধার্মিকতা দেখানেরা চেষ্টা করুক। কয়িন ঈশ্বরের সাক্ষাতে ভূমির ফল- যেমনঃ টমেটো, কুমড়া, আলু ইত্যাদি আনল। কয়িন তার কষ্ট করে উৎপন্ন করা ভূমির এই সমস্ত ফল ঈশ্বরের সাক্ষাতে আনল এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে উৎসর্গ করল। কিন্তু ঈশ্বর সেই দান গ্রহণ করলেন না। 
এটা আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়? এটা আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, ঈশ্বর মানুষের ধার্মিকতা গ্রহণ করেন না। যাইহোক, বর্তমানে সারা পৃথিবীর খ্রীষ্টান বিশ্বাসীরা কয়িনের মতো ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজেদের আত্মধার্মিকতা উপস্থিত করে। তারা প্রভুর নামে অনেক দান-ধ্যানের কাজ করেছে। তারা নিজেদের শহরগুলোতে প্রচারকের কাজ করেছে। তারা তাদের শহরকে খ্রীষ্টান করেছে। তারা অনেক মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছে। তারা এক বছরে ১০০ অন্ধ লোকের অস্ত্রপচারের খরচ বহন করেছে। তারপর তারা এটা বলে বড়াই করে যে, “আমরা ১০০ অন্ধ মানুষের অস্ত্রপচারের খরচ দিয়েছি এবং তাদেরকে আবারো পৃথিবীর আলো দেখিয়েছি। আমরা খরচ দিয়ে অনেক দেশে সুসমাচর প্রচারের কাজে সহায়তা করেছি।” খ্রীষ্টানরা এভাবে তাদের আত্মধার্মিকতা দেখাতে মগ্ন থাকে।
যাইহোক, ঈশ্বর চান না, মানুষ এরকম কিছু করুক। বরং ঈশ্বর চান, মানুষ যীশুর ধার্মিকতা গ্রহণ করুক, যিনি তাদের চিকিৎসক হয়েছেন এবং জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা সমস্ত পাপে-পীড়িত মানুষের আরোগ্য সাধন করেছেন। ঈশ্বর আমাদেরকে অনুযোগ করেন, যেন আমরা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি, যে ধার্মিকতা দ্বারা তিনি আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ থেকে এবং তাঁর বিচার থেকে পরিত্রাণ করেছেন। প্রভু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য তুলে নিয়েছিলেন, এবং ক্রুশারোপিত হয়ে আমাদের সমস্ত পাপের দন্ড ভোগ করলেন, আর আমাদের মতো মৃত মানুষদেরকে আবারো জীবনে পুনরুত্থিত করলেন। আমরা ধ্বংসের ঠিক মাঝখানে চলে গিয়েছিলাম, কিন্তু প্রভু আমাদেরকে সেখান থেকে মুক্ত করলেন, ঈশ্বরের সন্তান বানালেন এবং ঈশ্বরের কার্য্যকারী বানালেন, যারা সারা পৃথিবীতে ঈশ্বরের ধার্মিকতা প্রচার করতে পারে। ঈশ্বর চান আমরা এই রকম বিশ্বাস নিয়ে তাঁর সাক্ষাতে আসি। ঈশ্বর চান আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ হই, কারণ তিনি আমাদেরকে এমন ধার্মিক মানুষ বানিয়েছেন। তিনি আরও চান, যে সমস্ত পাপে-পীড়িত লোকেরা এখনো তাঁর ধার্মিকতা জানে না, তারা বিশ্বাসে তাঁর কাছে আসুক। 
প্রভুর পরিত্রাণের জন্য আমরা তাঁর নিকট অবশ্যই খুব কৃতজ্ঞ হব, কারণ তিনি জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। আর এই সুসমাচার অন্য লোকদের কাছে প্রচার করার জন্য আমাদেরকে প্রভুর ধার্মিকতায় অব্যই নির্ভর করতে হবে। যেহেতু ঈশ্বর থেকে এই পরিত্রাণের অনুগ্রহ লাভের জন্য আমরা খুবই কৃতজ্ঞ, তাই আমরা অন্যদের কাছে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করার জন্য নিজেদেরকে নিয়োজিত করব। প্রভু আমাদেরকে যে কার্যের দায়িত্ব দিয়েছেন, তা সম্পন্ন করার জন্য আমাদেরকে প্রভুর নিকটে আসতেই হবে; আর এই সমস্ত কার্য যিনি সাধন করেছেন, সেই প্রভুর নিকটে আমরা কৃতজ্ঞ হব। এইজন্যই, আমরা ঈশ্বরের বাক্য প্রচার ও শোনার জন্য, প্রার্থনা করার জন্য এবং প্রভুকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য প্রত্যেক সপ্তায় বেশ কয়েকবার আরাধনা সভা করি। এই ধরণের আরাধনা সভায় ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন। প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়ে মোচন করেছিলেন বলে আমি তাঁর নিকট খুবই কৃতজ্ঞ। আমাদেরকে নিষ্পাপ মানুষ বানিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাসে প্রভুকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আর তাঁর ধার্মিকতার কার্য করার জন্য আমাদেরকে নিজের কার্য্যকারীরূপে নিয়োগ করেছেন বলে আমি প্রভুর নিকট আরো বেশি কৃতজ্ঞ।
সমগ্র পৃথিবীর মানুষ এখন বিভিন্ন ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে পতিত হয়েছে। আর এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল- খ্রীষ্টান নেতারা এখন জল ও আত্মার সুসমাচার না জেনেই শুধুমাত্র ক্রুশীয় রক্তকে প্রচার করে। এইজন্যই আমাদের তাদেরকে প্রভুর ধার্মিকতা সম্পর্কে বোঝাতে হবে। পৃথিবীর সমস্ত লোকদের কাছে আমাদের অবশ্যই প্রচার করতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে যে- প্রভু পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে তাদের পাপ ও বিচারদন্ড থেকে পরিত্রাণ করেছেন; আমরা যারা প্রকৃত বিশ্বাসী, আমাদেরকে ঈশ্বরের সন্তান বানিয়েছেন; আর আমাদেরকে অনন্ত জীবন, অনন্ত ধন ও পরাক্রম ও আশীর্বাদ দান করেছেন। সমগ্র পৃথিবীর খ্রীষ্টান নেতাদের জল ও আত্মার এই সুসমাচার অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে এবং সর্বপ্রথমে নিজেদের কাছেই  প্রচার করতে হবে, এরপর মন্ডলীর সদস্যদের কাছে, এবং অতঃপর সারা পৃথিবীর লোকদের কাছে প্রচার করতে হবে। তাদেরকে পরিত্রাণের এই কার্যে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে এবং হারানো আত্মাদের কাছে প্রচার করতে হবে যে, প্রভু বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা তাদের এবং জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশের উপরে এই সমস্ত পাপের শাস্তি ভোগ করেছিলেন, ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছিলেন এবং হত হয়েছিলেন, এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, আর এভাবে আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন। তাদেরকে প্রভুর প্রেম ও ঈশ্বরের পরিত্রাণ অবশ্যই বিশ্বাসে প্রচার করতে হবে; ঈশ্বরের পরিত্রাণ সমগ্র মানবজাতিকে পরিত্রাণ করে। তাদেরকে অবশ্যই এই সত্যেই দম্ভ করতে হবে, এবং যখনই পুলেপিটে দাঁড়াবে, তখনই এই সত্যই প্রচার করতে হবে। তাদেরকে এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে, এবং সারা পৃথিবীতে এই সুন্দর সুসমাচার প্রচারের জন্য তাদের আকাঙ্খা থাকতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, মরিয়ম নামে একজন স্ত্রীলোক সাদা পাথরের পাত্রে বহুমূল্য সুগন্ধি তেল এনে যীশুর মাথায় ঢেলে দিল, সেই তেলের দাম অনেক, যা প্রায় এক বছরের বেতনের সমান। স্ত্রীলোকটি সেই পাত্র ভেঙ্গে এত দামী তেল যীশুর মাথায় ঢেলে দিল। সেই সময় যিহূদা এটা দেখে বিরক্ত হয়ে মনে মনে বলল যে, “যীশু কেন এই স্ত্রীলোকটিকে এত মূল্যবান তেল তাঁর মাথায় ঢালতে দিচ্ছেন? এই বহুমূল্য তেল বিক্রি করে সেই টাকা কি গরীবদেরকে দেওয়া যেত না?” 
কিন্তু যীশু তখন কি বললেন? তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “স্ত্রীলোকটিকে কেন দুঃখ দিতেছ? এ ত আমার প্রতি সৎকার্য করিল। কেননা দরিদ্রেরা তোমাদের কাছে সর্বদাই আছে, কিন্তু তোমরা আমাকে সর্বদা পাইবে না” (মথি ২৬:১০-১১)। প্রভু ইতোমধ্যেই জানতেন যে, তাঁকে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করতে হবে, কারণ তিনি যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। আর তিনি জানতেন যে, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার দ্বারা তিনি আমাদের অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হবেন। তিনি এই বিষয়েই বলছিলেন। প্রভু তাদের বললেন, “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, সমুদয় জগতে যে কোন স্থানে এই সুসমাচার প্রচারিত হইবে, সেই স্থানে ইহার এই কর্মের কথাও ইহার স্মরণার্থে বলা যাইবে।”
আমরা মাংসে যত ভাল কাজই করি না কেন, এরপরও এই পৃথিবীতে অনেক গরীব-দুঃখী লোক আছে। এর কারণ হল- মনুষ্যত্ব দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, কারণ তারা ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, এবং শয়তান এখন এই পৃথিবীতে রাজত্ব করছে। এর কারণে মনুষ্যত্বের মৃত্যু ঘটছে, আর মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। আর যখনই মানুষ খুব তীব্র কষ্ট-যন্ত্রণা ভোগ করে, তখন তারা ঈশ্বরের দিকে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করে। ঈশ্বর তাঁর চোখ বন্ধ করেছেন এবং ভান করছেন যে, তিনি এই লোকদের এই সমস্ত কর্মকান্ড দেখতে পাচ্ছেন না; আর তারা অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে। প্রভু এই সমস্ত ঘটনা ঘটতে দিচ্ছেন যেন সেই বিচারের দিনে তাদের বিচার করতে পারেন। এইজন্য, প্রভুর দৃষ্টিতে এই স্ত্রীলোকটি, যে বহুমূল্য সুগন্ধি তেল যীশুর মাথায় ঢেলেছিল, সে একজন ধার্মিক মানুষ ছিল।
যদি আমরা গরীবদের অনবরত সাহায্য দিয়ে যেতাম, তাহলে কি দারিদ্রতা শেষ হয়ে যেত? অবশ্যই তাদের অবস্থা আগের থেকে ভাল হতো। কিন্তু মৌলিকভাবে কোন জিনিসের পরিবর্তন ঘটবে? গরীবদের অনবরত নিঃশর্তভাবে সাহায্য দান করে যাওয়া, শুধুমাত্র এই জাতীয় ভাল কাজ করাই কি বর্তমান খ্রীষ্টানদের জন্য যথেষ্ট? আমাদেরকে, খ্রীষ্টানদেরকে প্রভুর প্রেম অবশ্যই জানতে হবে, এবং আরো জানতে ও বিশ্বাস করতে হবে যে, ঈশ্বর জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন; এরপর আমাদেরকে এই সুসমাচার প্রচার করতে হবে। আমাদের বরং লোকদের এই জন্য সাহায্য করা উচিৎ, যাতে আমরা তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করতে পারি। যাইহোক, আজকের খ্রীষ্টানরা যীশুর ধার্মিকতা একদিকে সরিয়ে রাখে, যিনি পাপে-পীড়িত মানুষের চিকিৎসক; আর তারা যীশুর পরিত্রাণ একদিকে সরিয়ে রাখে, যা সমগ্র মানবজাতিকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা পরিত্রাণ করেছে। এটা না করে, তারা নিজেদের আত্মধার্মিকতার দম্ভ করার জন্য লোকদেরকে মাংসিকভাবে সাহায্য করে, আর তারপর নিজেদের এই ধার্মিকতাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরে লোকদেরকে বলে যীশুতে বিশ্বাস করতে। এভাবে তারা নিজেদের ডিনোমিনেশনের দম্ভ করতে থাকে এবং তাদের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতাদের গুণগান করতে থাকে। এটা ঠিক নয়।
এই সমস্ত ব্যবস্থাবেত্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং যীশুর দৃষ্টিভঙ্গি এভাবে পৃথক ছিল। যীশু যখন মথিকে দেখলেন, তিনি দেখলেন যে, মথি সর্বদা পাপ করেছে, আর এইজন্য তার যীশুকে সর্বদা দরকার ছিল। মথি এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি যীশু খ্রীষ্টকে না পেলে অবশ্যই মারা যেতেন। যীশুকে না পেলে তিনি অবশ্যই বিনষ্ট হতেন। যীশু যদি যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা তার সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে না নিতেন, আর সেই পাপের জন্য ক্রুশারোপিত না হতেন, এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের দ্বারা তার ত্রানকর্তা না হতেন, তাহলে তাকে নরকে যেতেই হতো। অতএব, যীশু এই ব্যক্তির জন্য আবশ্যক ছিলেন, আর এই ব্যক্তির মতো আমাদের সবার চিকিৎসক হলেন যীশু। 
 
 
যাইহোক, এই সমস্ত ব্যবস্থাবেত্তারা কেমন?
 
প্রভু এই সমস্ত ব্যবস্থাবেত্তাদের বলেছেন যে, তারা ভুল ছিল। প্রভু তাদের বলেছেন, “তোমাদের আত্মধার্মিকতায় অহংকার কর না। তোমাদের কোন ধার্মিকতা নেই। তোমরা যে ধার্মিকতা নিয়ে দম্ভ করছো, সেটা কিছুই না, সেটা সম্পূর্ণরূপে অকেজো। যদি তোমরা মৃতপ্রায় লোকদেরকে ত্রাণ দিয়ে থাকো, যদি নিজেদের কষ্টের উপার্জিত অর্থ দিয়ে তাদের চিকিৎসা করে থাকো, আর যদি তোমরা সারাটা জীবন ধরে এইরকম ভাল জীবনই যাপন করে থাকো, কিন্তু যদি সমগ্র জীবনে মাত্র একবারের জন্যও কাউকে ঘৃণা করে থাকো অথবা মিথ্যা বলে থাকো, তাহলে তোমাদের এই সমস্ত ভাল কাজ সবই বৃথা হয়ে যাবে।” প্রভু এই সমস্ত ব্যবস্থাবেত্তাদের বলেন, “তোমরা নিজেদের পাপ সকল জানো, আর জানো যে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে তোমার ধার্মিক নও। তোমরা আরো জানো যে, তোমরা নিয়মিতভাবে পাপ করে থাকো। ঈশ্বরের কাছে অনুগ্রহ যাচ্ঞা কর, আর এভাবে তাঁর পরিত্রাণের প্রেম গ্রহণের দ্বারা নিজেদের পাপের ক্ষমা লাভ কর। পরিত্রাণের এই প্রেম প্রভু আপনাদেরকে এবং সমগ্র মানবজাতিকে দিয়েছেন।” প্রভু পাপে-পীড়িত এই সমস্ত মানুষকে দেখতে চান, এবং তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্রাণ করতে চান। 
এই সমস্ত ব্যবস্থাবেত্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং যীশুর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। আজকের খ্রীষ্টান বিশ্বাসীদের বিশ্বাসও খুবই ভ্রান্ত। খ্রীষ্টধর্ম এবং বৌদ্ধধর্মের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আজকালকার দিনে যখন আমরা খ্রীষ্টান টিভি অনুষ্ঠান দেখি, তখন দেখি, তারা দর্শকদের বলে যে, সারা পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচার করার জন্য তাদেরকে সম্প্রচারের যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। তাই তারা দর্শকদেরকে এটা নির্দিষ্ট ফোন নাম্বারে ফোন করতে বলে, আর তাদের ফোন কলের জন্য তারা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে নেয়, আর এই মুনাফা তারা এই নির্দিষ্ট খ্রীষ্টান সম্প্রচার কোম্পানীর ব্যাংক একাউন্টে জমা করে। তারা দর্শকদের বলে যে, এতে করে তারা সারা পৃথিবীতে যীশুকে প্রচার করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে পারবে। তাই তাদের খ্রীষ্টান সম্প্রচার কোম্পানীকে সহায়তা করার জন্য তারা দর্শকদেরকে বেশ কয়েকবার এই নাম্বারে ফোন করতে বলে। আর আমি ভাবতাম, শুধু খ্রীষ্টান সম্প্রচার প্রোগ্রামগুলোই মনে হয় এই রকম করে। 
কিন্তু যখন আমি একটি বৌদ্ধ টিভি অনুষ্ঠান দেখলাম, তাদেরকেও দেখলাম যে, তারা একইভাবে অর্থ সংগ্রহ করছে। তারা বলছিল যে, যদি দর্শকরা তাদের টিভি প্রোগামে ফোন করে, তাহলে তারা সেই অর্থ দিয়ে সম্প্রচারের কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে পারবে, যাতে করে তারা সারা পৃথিবীতে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করতে পারবে। তাই খ্রীষ্টধর্ম এবং বৌদ্ধধর্মের মধ্যে কোন পার্থক্যই নেই। এমনকি তাদের অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতিও একই। আজকের খ্রীষ্টান নেতাগণ বলেন যে, বিশ্বাসীরা যদি অনেক অর্থ দান করে এবং বিশ্বাসে প্রচুর দশমাংশ দান করে, তাহলে তারা আশীর্বাদ লাভ করবে। খ্রীষ্টধর্মের প্রতারকরা বলে যে, প্রচুর প্রার্থনার দ্বারা খ্রীষ্টানরা তাদের রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করে এবং ধনী হয়। আর বৌদ্ধরা কি করে? তারা বলে যে, লোকেরা যদি প্রচুর ভিক্ষা দান করে, প্রচুর প্রার্থনা করে এবং বৌদ্ধ প্রতিমাদের কাছে সৎভাবে প্রার্থনা করে, তাহলে তাদের সন্তানেরা উন্নতি করতে পারবে এবং তাদের মনের ইচ্ছা সকল পূর্ণ হবে। এমনকি এটাও খ্রীষ্টধর্ম থেকে একটুও আলাদা নয়। তারা বলে যে, একজন বিশ্বাসী যখন অমুক অমুক কাজ করে, তখন তার প্রতি অমুক অমুক জিনিস ঘটে। 
 
 
প্রভু এই ধরণের বিশ্বাস দ্বারা সন্তুষ্ট হন না
 
প্রভু ব্যবস্থাবেত্তাদের বিশ্বাস দ্বারা সন্তুষ্ট হন না। সারা পৃথিবীর ব্যবস্থাবেত্তাদের আজকাল যে ধরণের বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকে, প্রভু সেই বিশ্বাসে সন্তুষ্ট হন না। যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে এবং তা অন্যদের কাছে প্রচার করে, প্রভু তাদের উপর সন্তুষ্ট হন। আমাদেরকে নিজেদের ভুল-ভ্রান্তি জানতে হবে, এবং প্রভুর অনুগ্রহের জন্য আকাঙ্খা করতে হবে; আর আমাদের প্রভুর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে হবে এবং প্রতিদিন তাঁতে নির্ভর করতে হবে। আমরা যারা এই রকম, প্রভু আমাদের নিয়ে সন্তুষ্ট, এবং আমাদেরকে ধার্মিক বলে গণ্য করেন। আর প্রভু আমাদেরকে সুসমাচার প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছেন।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যদি আপনারা প্রভুতে বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনাদেরকে প্রথমে পাপের মোচন লাভ করতে হবে। শুধুমাত্র তাহলেই আপনারা পরিত্রাণ লাভ করতে পারবেন এবং বিচারদন্ড এড়াতে পারবেন। নিজের পাপের ক্ষমা লাভের পর আপনারা অন্যদেরও সাহায্য করতে পারবেন। বিশ্বাসে পাপের ক্ষমা লাভের পরও আমাদের প্রতিদিন প্রভুর ধার্মিকতার প্রয়োজন রয়েছে। সুতরাং, আমরা এই অনুগ্রহ নিয়েই আমাদের বিশ্বাসের জীবন যাপন করি। আপনি এবং আমি, আমরা যারা এইভাবে প্রভুর আজ্ঞা পালন করি, এবং প্রভুর আজ্ঞানুসারে সুসমাচার প্রচার করি, আমাদের উপর প্রভু সন্তুষ্ট। 
আমাদেরকে আমাদের বিশ্বাসের জীবন অবশ্যই যথাযথভাবে যাপন করতে হবে। বিশ্বাসের জীবন শুরুর আগে আমাদেরকে অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানতে হবে। প্রভু বলেছেন, “আর তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে” (যোহন ৮:৩২)। এই সত্য হল জল ও আত্মার সুসমাচার। জল ও আত্মার সুসমাচারই হল সেই সত্য, যা আপনাকে এবং আমাকে আমাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করেছে। এই সত্য জানার দ্বারা এবং তাঁতে বিশ্বাসের দ্বারা পাপের পরিত্রাণ লাভের পর আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাসের জীবন যাপন করতে হবে। পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভের পর আমাদেরকে অবশ্যই প্রভুর সেবা করতে হবে এবং সমগ্র পৃথিবীতে তাঁর ধার্মিকতা প্রচার করতে হবে।
কিন্তু ব্যবস্থাবেত্তারা সত্যের এই সুসমাচার জানে না; কিন্তু তারা প্রভুর সাক্ষাতে তাদের আত্মধার্মিকতার বড়াই করে। তারা মিশনারী হিসেবে এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে; আর তারা নিজেদের শরীরের ক্ষতি করে সারারাত প্রার্থনা করে। এই সমস্ত জিনিস হল কয়িনের ভূমির সেই সমস্ত ফল, যা কয়িন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিল। আর তারা প্রভুর সাক্ষাতে এই সমস্ত পার্থিব জিনিস আনে। 
প্রভু এই সমস্ত জিনিসে খুশী হন না। প্রভু স্পষ্টভাবে বলেছেন, “আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়” (মথি ৯:১৩)। প্রত্যেক মানুষ ঈশ্বরের কাছে অবশ্যই দয়া চাইবে। প্রভু তাদের চান, যারা তাঁর কাছে অনুগ্রহ চায়, যারা বিনতি করে বলেন, “প্রভু, আমাকে দয়া কর।” যারা অন্ধভাবে বলিদান উৎসর্গ করে, প্রভু তাদেরকে চান না। একটা টেবিল ফল দিয়ে সাজিয়ে ঈশ্বরকে তা খেতে বলব এবং তার বিনিময়ে আমাদেরকে আশীর্বাদ করতে বলব- ঈশ্বর আমাদের কাছে এটা চান না। আমাদের প্রভু এই সমস্ত চান না। যখন আমরা আমাদের যোগ্যতার বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে প্রভুর সামনে অনেক কিছু আনি, আর তাঁকে শর্তসাপেক্ষে কোন কিছু চাই, তখন প্রভু সন্তুষ্ট হন না। প্রভু আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা পরিত্রাণ করেছেন, তাই তিনি চান আপনি এবং আমি কৃতজ্ঞতাসহকারে তাঁর সাক্ষাতে আসি। ‘আমার সব সময় প্রভুর ধার্মিকতার প্রয়োজন রয়েছে’- এটা জেনে ও বিশ্বাস করে যে প্রভুর কার্য করে, প্রভু তাঁর উপরে সন্তুষ্ট হন। 
যখন আমরা সমগ্র পৃথিবীর খ্রীষ্টান বিশ্বাসীদের আত্মিক জীবনের দিকে তাঁকাই, আমরা দেখতে পাই, তারা ধর্মীয় কপটতায় ও মন্দতায় পরিপূর্ণ। তাদেরকে নিজেদের চিন্তাভাবনা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। আসুন আমরা মথি ৯:১৪-১৭ পদ পাঠ করিঃ “তখন যোহনের শিষ্যগণ তাঁহার নিকটে আসিয়া কহিল, ফরীশীরা ও আমরা অনেক বার উপবাস করি, কিন্তু আপনার শিষ্যগণ উপবাস করে না, ইহার কারণ কি? যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, বর সঙ্গে থাকিতে কি বাসর ঘরের লোকে বিলাপ করিতে পারে? কিন্তু এমন সময় আসিবে, যখন তাহাদের নিকট হইতে বর নীত হইবেন; তখন তাহারা উপবাস করিবে। পুরাতন বস্ত্রে কেহ নূতন কাপড়ের তালি দেয় না, কেননা তাহার তালিতে বস্ত্র ছিঁড়িয়া যায়, এবং আরও মন্দ ছিদ্র হয়। আর লোকে পুরাতন কূপায় নূতন দ্রাক্ষারস রাখে না; রাখিলে কূপাগুলি ফাটিয়া যায়, তাহাতে দ্রাক্ষারস পড়িয়া যায়, কূপাগুলিও নষ্ট হয়; কিন্তু লোকে নূতন কূপাতেই টাট্কা দ্রাক্ষারস রাখে, তাহাতে উভয়েরই রক্ষা হয়।”
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমরা যদি কোরিয়ান সংস্কৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে আমরা ১৭ পদ বুঝতে পারব না। কেন? কারণ এখানে বলা আছে, লোকেরা সে সময় কূপাতে দ্রাক্ষারস রাখত, কিন্তু কোরিয়ানরা কূপাতে দ্রাক্ষারস রাখে না। আমরা মদ একটা পাত্রে অথবা কাঠের তৈরী ব্যারেলে রাখি। যাইহোক, শাস্ত্রে এখানে পলেষ্টীয় সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। ঐ দেশের লোকেরা ছাগলের অথবা ভেড়ার চামড়া ব্যবহার করত, কারণ তারা গবাদিপশুর লালন-পালন করত। তারা ছাগল অথবা ভেড়ার চামড়া নিয়ে তার উপরে লবণ ছিটিয়ে রোদে শুকাতে দিত। শুকানোর পর তারা এর উভয় পাশে সেলাই করতো, যাতে তাতে পানি অথবা অন্যান্য তরল দ্রব্য ধরে রাখা যায়। এই জিনিসটিই হল কূপা। 
যখন একটা লম্বা সময় ধরে এই কূপার মধ্যে দ্রাক্ষারস গাঁজানো হতো, তখন দ্রাক্ষারস পচে যেত, কারণ কূপা হচ্ছে চামড়ার তৈরী। এটা পচতে শুরু করতো। একটা লম্বা সময়ের পর এই কূপা পোকার খাদ্য হয়ে যেত, অথবা এটা পচে যেত, অথবা এটাকে পরা হতো। কেউ যদি নতুন দ্রাক্ষারস বানিয়ে তা পুরাতন কূপাতে রাখে, তাহলে কি হবে? নতুন দ্রাক্ষারস কূপা ফেটে বের হয়ে যাবে ও নষ্ট হয়ে যাবে। কেউ সেই দ্রাক্ষারস পান করতে পারবে না। যাইহোক, এখানে প্রভুর এই বাক্যের মূল বিষয়টি হলো- মানুষকে অবশ্যই তাদের চিন্তাধারা পরিবর্তন করতে হবে, যা তারা তাদের সমগ্র ধর্মীয় জীবন ধরে পোষণ করতো। 
যদি কেউ তার পাপ উপলব্ধি করার পর যীশুর সাক্ষাতে আসে, সে যোহন বাপ্তাইজকের নিকট নেওয়া যীশুর বাপ্তিস্মে এবং ক্রুশে তাঁর সেচিত রক্তে বিশ্বাস দ্বারা তার সমস্ত পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারে। এভাবে সে ঈশ্বরের সন্তান হতে পারে। ঈশ্বর চান, আমরা মানবজাতি সবাই এই রকম হই। প্রভু আমাদের কাছে কোন বলিদান চান না, বরং তিনি চান, আমরাই যেন ঈশ্বরের কাছ থেকে অনুগ্রহ গ্রহণ করি। প্রভু চান- আমরা যেন তাঁর কাছ থেকে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন গ্রহণ করি, এবং তাঁর সন্তান হওয়ার আশীর্বাদ গ্রহণ করি।
যাইহোক, যদি লোকেরা তাদের অন্তর্নিবিষ্ট চিন্তানুসারে যীশুর এই শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, যার দ্বারা তারা তাদের আত্মিক জীবন যাপন করতো, তাহলে বাক্যের এই নতুন দ্রাক্ষারস হৃদয়ে জমা না হয়ে বাইরে পড়ে যাবে, আর নষ্ট হয়ে যাবে। বাক্যের এই শক্তিশালী দ্রাক্ষারসের প্রভাবে পুরাতন কূপা ফেটে যায়, আর তখন এই বাক্য মাটিতে পড়ে যায়, আর তাদের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এই পৃথিবীর ব্যবস্থাবেত্তাদের অতি দ্রুত তাদের চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করতে হবে। খ্রীষ্টানরা জল ও আত্মার সুসমাচার জানে না, এবং এতে বিশ্বাস করে না বলে এখন পর্যন্ত এতটা লম্বা সময় তারা ব্যবস্থা পালন করে এসেছে। এর অর্থ হল- তারা শুধুমাত্র যীশুর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস দ্বারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে এসেছে। তারা এটা উপলব্ধি করে না যে, প্রভু যেহেতু আমাদের জন্য নিজেকে প্রথমে উৎসর্গ করেছেন, তাই আমাদেরকেও প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত হতে হবে; আর তারা এটাও উপলব্ধি করে না যে, আমাদেরকে প্রভুর চরণে আমাদের জীবন দিয়ে দিতে হবে। এগুলো না করে তারা ব্যবস্থার জীবন ধারণ করে আসছে। যাইহোক, এখন থেকে আমরা আর এই রকম বিশ্বাসের জীবন যাপন করব না।  
এখন তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে, তারা প্রভু সাক্ষাতে প্রতিদিন পাপ করে। তাদেরকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, তারা মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ করবে। আর তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে, অনেক অনুতাপকারী প্রার্থনা উৎসর্গ করলেও এবং ক্রন্দন করলেও তারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারবে না। তাই, তাদেরকে বিশ্বাসে পাপের ক্ষমা লাভ করতে হবে, যা প্রভু তাদেরকে দিয়েছেন। 
প্রভু বলেন, 
“সদাপ্রভু কহিতেছেন,
‘আইস, আমরা উত্তর প্রত্যুত্তর করি; 
তোমাদের পাপ সকল সিন্দূরবর্ণ হইলেও 
হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ হইবে;
লাক্ষার ন্যায় রাঙ্গা হইলেও
মেষলোমের ন্যায় হইবে’” (যিশাইয় ১:১৮)।
প্রভু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচনের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপের শাস্তি ভোগ করেছিলেন। এভাবে হত হওয়ার দ্বারা এবং পুনরুত্থিত হওয়ার দ্বারা তিনি আমাদের অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এভাবে পাপ থেকে পরিত্রাণ করে প্রভু আমাদেরকে তুষারের মতো সাদা করেছেন। সুতরাং, সকলকে পরিত্রাণের এই সুসমাচারে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। সকলকে এতে বিশ্বাস করতে হবে এবং ঈশ্বরের নিকট কৃতজ্ঞ হতে হবে। সকলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিবে, কারণ তারা অন্তঃকরণে নিষ্পাপ হয়েছে। প্রভু তাঁর শিষ্যদেরকে সত্যের এই বহুমূল্য সুসমাচার প্রচার করতে বলেছিলেন; আর একইভাবে, আমরাও বিশ্বাসের এমন মানুষ হব, যারা কৃতজ্ঞতার সাথে এই সত্য প্রচার করে। 
সমগ্র পৃথিবীর খ্রীষ্টানরা প্রভুর সাক্ষাতে পাপে-পীড়িত। কিন্তু বাস্তবতা হল- তারা জানে না যে, তারা পাপে-পীড়িত। তারা জানে না যে- তারা পাপে-পীড়িত মানুষ, আর বাঁচতে হলে তাদেরকে প্রভুর অনুগ্রহ লাভ করতে হবে। এইজন্য, তাদেরকে অবশ্যই ঈশ্বরের কাছে অনুগ্রহ যাচ্ঞা করতে হবে। নিজেদের বুকে আঘাত করতে করতে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করে তাদেরকে প্রভুর অনুগ্রহ অবশ্যই যাচ্ঞা করতে হবে। তাদেরকে এভাবে প্রার্থনা করতে হবে যে, “প্রভু, আমাকে অনুগ্রহ কর। দয়া করে আমাকে রক্ষা কর। প্রভু, আমি ধার্মিক জীবন যাপন করি নাই, আমি দশমাংশ দান করি নাই, আর আমি প্রতিদিন কুচিন্তা করি। আমি এত নিকৃষ্ট পাপী। প্রভু, দয়া করে আমাকে রক্ষার করা। প্রভু, তুমি যদি আমাকে পরিত্রাণ কর, তাহলে আমি রক্ষা পেতে পারব। কিন্তু তুমি যদি আমাকে পরিত্রাণ না কর, তাহলে আমি আমার পরিত্রাণ লাভ করতে পারব না, ফলোশ্রুতিতে, আমাকে নরকে যেতে হবে।” আমাদের অবশ্যই এই রকম বিশুদ্ধ ও সৎ হৃদয় থাকতে হবে। 
আমরা কখনোই ফরীশীদের মতো করে প্রভুর সাক্ষাতে আসবো না, আমরা বলব না, “হে ঈশ্বর, আমি তোমার ধন্যবাদ করি যে, আমি অন্য সকল লোকের- উপদ্রবী, অন্যায়ী ও ব্যভিচারীদের- মত কিম্বা ঐ করগ্রাহীর মত নহি; আমি সপ্তাহের মধ্যে দুই বার উপবাস করি, সমস্ত আয়ের দশমাংশ দান করি” (লূক ১৮:১১-১২)। যারা এখন পর্যন্ত এভাবে আত্মিক জীবন যাপন করেছে, তাদেরকে প্রভুর সাক্ষাতে তাদের চিন্তার ধারা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের নিজেদেরকে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয়, কিন্তু প্রভুর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে। প্রভুকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমাদের অবশ্যই কোন ধরণের বিশ্বাস নিয়ে প্রভুর সাক্ষাতে আসতে হবে? যারা নিজেদের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে না, কিন্তু প্রভুর প্রেমে ও তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে তাঁর সাক্ষাতে আসে, প্রভু তাদের উপর সন্তুষ্ট হন। আমাদেরকে অবশ্যই এমন আত্মিক জীবন যাপন করতে হবে, যা প্রভু-প্রদত্ত পরিত্রাণের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে। প্রিয় সহ-বিশ্বাসীগণ, এটা সত্য নাকি মিথ্যা? এটা সত্য। 
আজকের শাস্ত্রাংশটি খুবই সহজবোধ্য। এমনকি আমরা এটা সম্পূর্ণরূপে মুখস্থ করতে পারি। যাইহোক, অনেক মানুষ বুঝতে পারে না যে, এই বাক্য আসলে কি বলছে। প্রভু বলেছেন, “কেননা আমি ধার্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকে ডাকিতে আসিয়াছি।” এই পদের অর্থ হল- এই পৃথিবীতে নিষ্পাপ কেউ নেই। সবাই পাপ করেছে, কারণ লেখা আছে, “কেননা সকলেই পাপ করিয়াছে এবং ঈশ্বরের গৌরব-বিহীন হইয়াছে” (রোমীয় ৩:২৩)। তথাপি, প্রভু এই জগতে আসলেন এবং তাঁর ধার্মিকতা দ্বারা সমগ্র মানবজাতিকে পরিত্রাণ করলেন; আমাদের একমাত্র গন্তব্য ছিল নরক। প্রভু আমাদেরকে এমন প্রেম করলেন যে, বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন, ক্রুশে হত হলেন, এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের দ্বারা আমাদের সকলকে পরিত্রাণ করলেন। এই পরিত্রাণের জন্য আমরা বিশ্বাসে মুক্তি লাভ করেছি। প্রভু আমাদেরকে পাপী বলেছিলেন, কিন্তু তিনি জল ও আত্মার এই সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন এবং আমাদেরকে ঈশ্বরের সন্তান বানিয়েছেন। প্রভু পাপীদেরকে ধার্মিক বানিয়েছেন, এখন তাদের মধ্যে পাপের লেশমাত্র নেই। আমাদের জন্য এটা সাধনের জন্যই প্রভু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। 
যাইহোক, মানুষ শাস্ত্রের এই অনুচ্ছেদের ভুল অর্থ করে এবং সব সময় নিজেদেরকে দন্ডিতে করে। তারা চিন্তা করে যে, যীশুতে বিশ্বাস করার পরও তাদের মধ্যে পাপ রয়েছে। তারা চিন্তা করে যে, তাদের মধ্যে পাপ থাকা সত্ত্বেও তারা প্রভুকে ডাকে, এটা যথাযথ কাজ। তারা চিন্তা করে যে, যখন তারা প্রভুর সাক্ষাতে আসবে, পাপী হিসেবে আসবে, আর তাদেরকে পাপী হয়েই থাকতে হবে। আর প্রভু যেহেতু বলেছেন যে, অসুস্থ লোকেরই চিকিৎসকের প্রয়োজন, সুস্থ লোকের চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই; তারা এই কথারও ভুল অর্থ বোঝে, তাই দৃঢ়ভাবে বলে যে, তাদেরকে অবশ্যই সব সময় পাপী হয়েই থাকতে হবে। তাই তারা ব্যবস্তা পালন করতেই থাকে। আর যদিও তাদের কোন ধার্মিকতা নেই, তবুও নিজেদের আত্মধার্মিকতার বড়াই করতে থাকে। এইজন্য, তারা পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারে না, আর প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে তারা সবকিছু হারায়। এই খ্রীষ্টান পাপীরা তাদের দ্বারা লুন্ঠিত হতে থাকে। 
প্রভু বলেন, “চোর আইসে, কেবল যেন চুরি, বধ ও বিনাশ করিতে পারে; আমি আসিয়াছি, যেন তাহারা জীবন পায় ও উপচয় পায়” (যোহন ১০:১০)। প্রভু এই জগতে এসেছিলেন আমাদেরকে পরিত্রাণ করার জন্য, আর তিনি যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। আমাদেরকে ঈশ্বরের নিষ্পাপ সন্তান বানানোর জন্য প্রভু এইভাবে এই জগতে এসেছিলেন।
যাইহোক, কপটরা, অর্থাৎ আজকের ধর্মীয় নেতারা লোকদের চুরি করার জন্য এসেছে। এই ধর্মীয় নেতারা হলো ভাড়ার গোলাম, তারা লোকদের দান, সময়, প্রচেষ্টা এবং সবকিছুই চুরি করে। আপনাকে এটা পরিষ্কারভাবে জানতে হবে যে, যদি কারো হৃদয়ে পাপ থাকে, তাহলে সে যতই যীশুতে বিশ্বাস করুক না কেন, সে স্বর্গে যেতে পারবে না। সুতরাং, এই সমস্ত কপটদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে যারা তাদের আত্মিক জীবন যাপন করছে, তারা নরকে যাবে। এদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে আপনি এই রকম মূল্যহীন আত্মিক জীবন যাপন করবেন না। বর্তমান দিনগুলোতে আমি এই সমস্ত বিষয়ে অনেক বার বলেছি। শাস্ত্র এই সমস্ত বিষয় নিয়ে স্পষ্টভাবে বলেছে, কিন্তু মানুষ তা জানে না। তারা কেন এটা জানে না? এর কারণ হল, তারা ঈশ্বরের বাক্যকে মাংসিকভাবে ব্যাখ্যা করে। 
এই পৃথিবীতে মূলতঃ কোন ধার্মিক মানুষ ছিল না, কারণ লেখা আছে, “ধার্মিক কেহই নাই, এক জনও নাই” (রোমীয় ৩:১০)। প্রত্যেকেই পাপী ছিল। যাইহোক, প্রভু এই জগতে আসলেন এবং যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা, ক্রুশে হত হওয়ার দ্বারা এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার দ্বারা আমাদেরকে পরিত্রাণ করলেন। এইজন্য, পরিত্রাণের এই কার্যের পর, যারা এই সত্য জেনেছে ও বিশ্বাস করেছে, তারা ধার্মিক হয়েছে। তারা সবাই ঈশ্বরের সন্তান হয়েছে। 
প্রিয় সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনারা শাস্ত্র অবশ্যই মাংসিকভাবে ব্যাখ্যা করবেন না। আপনাকে বাক্য শাস্ত্রের মতো করেই বুঝতে হবে। আর আপনার নিজেকে অবশ্যই প্রভুর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। আর আপনাকে প্রভুর দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্যই দেখতে হবে যে, প্রভু কি সত্যিই আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন, নাকি করেন নাই? আমাদেরকে প্রভুর দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্যই দেখতে হবে যে, আপনার এবং আমার প্রভুকে প্রতিদিন প্রয়োজন আছে কিনা? আপনাকে জল ও আত্মার আত্মিক সুসমাচার অবশ্যই জানতে ও বিশ্বাস করতে হবে। সমগ্র পৃথিবীর সমস্ত মানুষ বিশ্বাসে ঈশ্বরের সুসমাচারের কাছে অবশ্যই ফিরে যাবে। প্রত্যেককে ঈশ্বরের ধার্মিকতা জেনে ও বিশ্বাস করে তাঁর কাছে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। আর আমরা যারা বিশ্বাস করি, আমাদেরকে জল ও আত্মার এই সুসমাচার সমগ্র পৃথিবীতে অবশ্যই অবিরতভাবে প্রচার করে যেতে হবে। 
এই পৃথিবীতে এখনো অনেক হারানো আত্মা আছে। আমাদের ইলেকট্রনিক ই-বুকের মাধ্যমে এবং ছাপানো বইয়ের মাধ্যমেও আমরা সত্যের এই সুসমাচার প্রচুররূপে প্রচার করেছি। সমগ্র পৃথিবীতে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তারা সবাই আমাদের ওয়েবসাইট দেখে নাই। এই পৃথিবীর অনেক হারানো আত্মাদের কাছেও আমরা এই প্রকৃত সুসমাচার ছড়িয়ে দিয়েছি। এখন আমাদের পরিকল্পনা আছে, যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না, তাদের জন্য লিফলেটস বানাবো, যার মাধ্যমে তারা জল ও আত্মার সুসমাচার জানতে পারবে। আমরা এইভাবে কাজ করে যাব, যাতে প্রত্যেকেই প্রভুকে জানতে পারে। আমরা আশা ও প্রার্থনা করি যে, আমাদের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অনেক পাপে-পীড়িত মানুষ প্রভুকে জানতে পারবে।
হাল্লিলূয়া!