Search

সুসমাচার কি?

জল ও আত্মার সুসমাচার কি?

প্রেরিত পৌল বলেছেন, “ফলতঃ প্রথম স্থলে আমি তোমাদের কাছে এই শিক্ষা সমর্পণ করিয়াছি, এবং ইহা আপনিও পাইয়াছি যে, শাস্ত্রানুসারে খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরিলেন, ও কবর প্রাপ্ত হইলেন, আর শাস্ত্রানুসারে তিনি তৃতীয় দিবসে উত্থাপিত হইয়াছেন;” (১ করিন্থীয় ১৫:৩-৪)৷ “শাস্ত্রানুসারে খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরিলেন” এই বাক্যাংশে “শাস্ত্রানুসারে” এই শব্দটির অর্থ কি ? এর অর্থ পুরাতন নিয়ম৷ প্রেরিত পৌল বলেছেন যে পুরাতন নিয়মের সন্ধি ও প্রকাশনা অনুসারে যীশু আমাদের সকল পাপের জন্য মরেছিলেন৷ তিনি কিভাবে আমাদের সকল পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছিলেন? তিনি তাঁর ধার্মিক কার্যের দ্বারা তা করেছিলেন: তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় মৃত্যু৷

আপনারা জানেন, আদি মন্ডলীর সময়ে, দ্বিতীয় শতকের শেষ পর্যন্ত বড়দিন বা খ্রীষ্টমাস বলে কিছু ছিল না৷ প্রেরিতদের সাথে সাথে আদি খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কেবলমাত্র ৬ ই জানুয়ারী “যীশুর বাপ্তিস্মের দিন” রূপে স্মরনার্থক অনুষ্ঠান করত, এবং এটিই কেবল আদি মন্ডলীর একমাত্র স্মরনার্থক অনুষ্ঠান ছিল৷

প্রেরিতেরা কেন যীশুর বাপ্তিস্মের উপর এত জোর দিয়েছিলেন? এটাই জল ও আত্মার সত্য সুসমাচারের গোপন রহস্য, যা তারা যীশুর নিকট থেকে গ্রহণ করেছিল এবং জগতে প্রচার করেছিল৷ যীশু বলেছেন, “যদি কেহ জল এবং আত্মা হইতে না জন্মে, তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে পারে না” (যোহন ৩:৫)৷ বাইবেল বলে যে যীশু জল ও রক্তের দ্বারা আমাদেরকে নিজেদের সকল পাপ থেকে রক্ষা করবার জন্য এসেছিলেন (১ যোহন ৫:৬)৷ রক্তের অর্থ ক্রুশ, তাহলে জলের অর্থ কি?

(আমি আশা করি যে আপনারা বিশ্বাসীদের জল বাপ্তিস্ম ও যীশুর বাপ্তিস্মের মধ্যে বিভ্রান্ত হবেন না৷ দয়া করে যীশুর বাপ্তিস্মের অর্থের প্রতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মনোযোগ দিন৷ এখন আমরা বিশ্বাসীদের জল বাপ্তিস্ম অথবা baptismal regeneration তত্ত্বের আলোচনা করছি না৷)

যীশু কেন যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন? যীশু কেন তাঁর বাপ্তিস্মকে “সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত” বলে ঘোষণা করেছিলেন? (মথি ৩:১৫)

ইব্রীয় ১০:১ বলে, “কারণ ব্যবস্থা (ওই বলিদানগুলি) আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াবিশিষ্ট ...” আসুন পুরাতন নিয়মের সময়ে ঈশ্বর তাঁর লোকেদের পরিত্রাণের নিমিত্ত প্রতীকস্বরূপ যে বলিদান দিয়েছিলেন সেগুলি দেখা যাক৷ কেউ যদি পাপ করত ও অপরাধী হত, তাহলে সেই পাপীকে তার পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য একটি পাপার্থক বলি উত্সর্গ করতে হত৷ লেবীয়পুস্তক ১:৩-৫ পদ দেখি, “'সে যদি গোপাল হইতে হোমবলির উপহার দেয়, তবে নির্দ্দোষ এক পুংপশু আনিবে; সদাপ্রভুর সম্মুখে গ্রাহ্য হইবার জন্য সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে আনয়ন করিবে। পরে হোমবলির মস্তকে হস্তার্পণ করিবে; আর তাহা তাহার প্রায়শ্চিত্তরূপে তাহার পক্ষে গ্রাহ্য হইবে। পরে সে সদাপ্রভুর সম্মুখে সেই গোবৎস হনন করিবে, ও হারোণের পুত্র যাজকগণ তাহার রক্ত নিকটে আনিবে, এবং সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে স্থিত বেদির উপরে সেই রক্ত চারিদিকে প্রক্ষেপ করিবে।” এখানে, আমরা দেখতে পাই যে পাপার্থক বলিকে ঈশ্বরের সম্মুখে গ্রাহ্য হওয়ার পূর্বে নিচের তিনটি শর্ত পূরণ করতে হত৷

তাদেরকে
  • (১) হোমবলির জন্য একটি নির্দোষ পশু আনতে হত (৩ পদ)
  • (২) হোমবলির মস্তকের উপরে হস্তার্পণ করতে হত (৪ পদ)
  • (৩) তার পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য হোমবলির পশুকে হত্যা (রক্তপাতের উদ্দেশ্যে) করতে হত (৫ পদ)
যখন মহাযাজক হারোণ ছাগের মস্তকের উপর তার হস্তার্পণ করত, তখন ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত পাপ ছাগটির মস্তকে স্থানান্তরিত হত৷যখন

উপরের পদগুলি থেকে, আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ব্যবস্থা সম্পর্কে সুনিশ্চিত হতে হবে যে হোমবলির পশুটিকে হত্যা করবার পূর্বে হস্তার্পণের দ্বারা হোমবলির সেই পশুটির উপর পাপ স্থানান্তরণের প্রয়োজন ছিল৷ এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সত্য৷ পাপের মোচনের উদ্দেশ্যে “পাপার্থক বলির মস্তকের উপর হস্তার্পণ” করার মত বহু উক্তি লেবীয় পুস্তকের পরবর্তী অধ্যায়গুলিতে আপনারা খুঁজে পাবেন৷ লেবীয়পুস্তক ১৬:২১ বলে, “পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অর্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও তাহাদের সমস্ত অধর্ম্ম অর্থাৎ তাহাদের সর্ব্ববিধ পাপ তাহার উপরে স্বীকার করিয়া সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তুত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে।”

যখন মহাযাজক হারোণ ছাগের মস্তকের উপর তার হস্তার্পণ করত, তখন ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত পাপ ছাগটির মস্তকে স্থানান্তরিত হত৷যখন একজন পাপী বলিদানের পশুর মস্তকে হস্তার্পণ করত, তখন তার পাপ পশুটির মস্তকে স্থানান্তরিত হত৷সেই একইভাবে, যখন একজন ব্যক্তি যাজকত্ব করবার জন্য অর্পিত হয়, তখন একজন পরিচর্যাকারী সেই ব্যক্তির প্রতি যাজকত্ব আরোপ করবার জন্য তার মস্তকে হস্তার্পণ করে৷ সুতরাং, “হস্তার্পণ” হোমবলির প্রতি পাপ স্থানান্তরণের কার্য৷ এর অর্থ “সঞ্চারিত করা”৷

এবং তারপরে পশুটিকে অবশ্যই রক্তপাতের দ্বারা হত্যা করতে হত কারণ, “কেননা রক্তের মধ্যেই শরীরের প্রাণ থাকে,... কারণ প্রাণের গুণে রক্তই প্রায়শ্চিত্তসাধক” (লেবীয়পুস্তক ১৭:১১)৷

তবে, যদিও ইস্রায়েলীয়রা যতবারই পাপ করত, সেই প্রত্যেকবার পাপার্থক বলি উত্সর্গ করত, কিন্তু তা স্বত্ত্বেও তারা তাদের পাপের সম্পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত করবার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দুর্বল ছিল, কারণ তারা আমৃত্যু প্রতিদিন পাপ করেই যেত৷ তাই ঈশ্বর তাদের জন্য তাদের এক বছরের সমস্ত পাপ একেবারে ক্ষমা করে দেবার আরেকটি সুযোগ উন্মুক্ত করেছিলেন৷ সেটি ছিল প্রায়শ্চিত্তের দিনের আচারানুষ্ঠান৷ প্রায়শ্চিত্তের দিনে, মহাযাজক হারোণ সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বাত্সরিক পাপ সকলের জন্য একেবারে ছাগটির মস্তকে স্থানান্তরিত করবার জন্য বলিদানের ছাগের মস্তকের উপর তার হস্তার্পণ করত (লেবীয়পুস্তক ১৬:২১)৷

সেই সময় হারোণ ইস্রায়েলীয়দের প্রতিনিধি ছিল কারণ সে সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের স্থলে ছাগের মস্তকে হস্তার্পণ করত৷ সে নিজে যখন মস্তকে হস্তার্পণ করত, তখন সকল (সেই সময়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ লক্ষ) ইস্রায়েলীয়দের বাত্সরিক পাপ তার ব্যবস্থাসম্মত কার্যের মাধ্যমে বলিদানের ছাগটির মস্তকে স্থানান্তরিত হত৷ সেটি মানবজাতির জন্য চিরস্থায়ী নিয়ম ছিল (লেবীয়পুস্তক ১৬:২৯)৷

সেটি “আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়া” (ইব্রীয় ১০:১) ছিল৷ তারপর, ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে “আগামী উত্তম উত্তম বিষয়” সম্পূর্ণ করেছিলেন৷ দেখা যাক যীশু খ্রীষ্ট কিভাবে তাঁর নিয়ম পূর্ণ করেছিলেন৷

প্রথম, পিতা ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞাত মেষশাবকরূপে একজন নির্দোষ মানুষের অবয়বে যীশু খ্রীষ্টকে প্রেরণ করেছিলেন৷ তিনি ঈশ্বরের একজাত পুত্র, এবং তিনি পবিত্র ঈশ্বরও বটে৷ তাই তিনি সকল মানবজাতির নির্দোষ বলিদান হওয়ার যোগ্য ছিলেন৷

দ্বিতীয়, তিনি যর্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন৷ এখানে আমাদের জানা প্রয়োজন যে যীশুকে যিনি বাপ্তাইজিত করেছিলেন, সেই যোহন বাপ্তাইজক কে? যোহন বাপ্তাইজক মহাযাজক হারোনের একজন বংশধর ছিলেন৷ যোহনের পিতা সখরিয় যাজক, হারোনের নাতি অবিয়ের পালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন (লুক ১:৫, বংশাবলী ২৪:১০)৷ সুতরাং যোহন বাপ্তাইজক মহাযাজক হারোনের একজন বংশধর ছিলেন৷ এর অর্থ তার মহাযাজক হওয়ার অধিকার ছিল৷ অধিকন্তু, যীশু যোহনকে মানবজাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকার করেছিলেন৷ “আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক হইতে মহান্‌ কেহই উৎপন্ন হয় নাই৷ কেননা সমস্ত ভাববাদী ও ব্যবস্থা যোহন পর্য্যন্ত ভাববাণী বলিয়াছে” (মথি ১১:১১,১৪)৷ এর অর্থ যোহন বাপ্তাইজক পৃথিবীতে শেষ মহাযাজক এবং ঈশ্বর সকল মানবজাতির যে বৈধ প্রতিনিধির বিষয়ে প্রতিজ্ঞা ও প্রস্তুত করেছিলেন সেই তিনি৷

তার বিষয়ে পুরাতন নিয়মে ভাববাণী করা হয়েছিল৷ “দেখ, আমি আপন দূতকে প্রেরণ করিব, সে আমার অগ্রে পথ প্রস্তুত করিবে” (মালাখি ৩:১)৷ “তোমরা আমার দাস মোশির ব্যবস্থা স্মরণ কর; তাহাকে আমি হোরেবে সমস্ত ইস্রায়েলের জন্য সেই বিধি ও শাসনকলাপ আদেশ করিয়াছিলাম। দেখ, সদাপ্রভুর সেই মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিন আসিবার পূর্ব্বে আমি তোমাদের নিকটে এলির ভাববাদীকে প্রেরণ করিব। সে সন্তানদের প্রতি পিতৃগণের হৃদয়, ও পিতৃগণের প্রতি সন্তানদের হৃদয় ফিরাইবে; পাছে আমি আসিয়া পৃথিবীকে অভিশাপে আঘাত করি” (মালাখি ৪:৪-৬)৷ যীশু বলেছেন, “আর তোমরা যদি গ্রহণ করিতে সম্মত হও, তবে জানিবে, যে এলিয়ের আগমন হইবে, তিনি এই ব্যক্তি” (মথি ১১:১৪)৷

যোহন বাপ্তাইজক আগামীদিনে যার আগমন করবার কথা ছিল সেই এলিয় এবং তিনি সকল মানুষকে যীশু খ্রীষ্টকে গ্রহণ করবার জন্য প্রস্তুত করে তাদেরকে যীশুর দিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন৷ তিনি যীশুর ছয় মাস পূর্বে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ তিনি প্রভুর পথ প্রস্তুত করবার উদ্দেশ্যে প্রান্তরে মানুষকে অনুতাপের বাপ্তিস্ম দিতেন৷ মানুষকে তাদের পরিত্রাতা যীশু খ্রীষ্টের নিমিত্ত প্রস্তুত করবার উদ্দেশ্যে ব্যবস্থা ও বলিদানের বিধি স্মরণ করাবার জন্য চালনা করবার প্রয়োজন ছিল৷ তাই তিনি লোকেদের বাপ্তাইজিত করতেন এবং তাদেরকে বোঝাতেন যে ত্রাণকর্তা শীঘ্রই আসবেন এবং হস্তার্পনের মাধ্যমে জগতের সকল পাপ লাঘব করবেন৷ যোহনের বাপ্তিস্ম পাপীদের ঈশ্বরের নিকট ফিরে আসবার আহ্বান করত৷ বহু মানুষ যোহনের মাধ্যমে ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ করেছিল এবং তাদের পাপ স্বীকার করে, প্রতিমা পরিত্যাগ ও ঈশ্বরের নিকটে ফিরে এসেছিল৷

যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তিস্ম নিয়ে নতুন নিয়মে প্রভু যীশু জগতের পাপভার ধুয়ে দিলেন।

তারপর গালীল থেকে যীশু যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তাইজিত হওয়ার জন্য যর্দনে তার নিকট এলেন৷ যীশু বললেন, “এখন সম্মত হও, কারণে এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সম্পন্ন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত” (মথি ৩:১৫)৷ এখানে সমস্ত ধার্মিকতার গ্রীক প্রতিশব্দ "dikaiosune", যার অর্থ “ন্যায়সঙ্গত,ন্যায়বিচার”৷ এর অর্থ যীশু সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গতভাবে সকল পাপীকে তাদের পাপ থেকে রক্ষা করেছেন৷ সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গতভাবে সকল পাপীকে তাদের পাপ থেকে রক্ষা করবার জন্য, পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর যে নিয়ম স্থাপন করেছিলেন, তদানুসারে, যীশুকে “হস্তার্পনের” মাধ্যমে তাদের সকল পাপ লাঘব করতে হয়েছিল৷ যোহনের নিকট বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবার দ্বারা মানবজাতির সকল পাপের লাঘব করবার এটিই ছিল তাঁর জন্য সর্বোত্কৃষ্ট উপায়৷ যেহেতু যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা জগতের সকল পাপ গ্রহণ করেছিলেন তাই পরের দিন যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, “ওই দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান” (যোহন ১:২৯)৷ সেই যোহনই হস্তার্পনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম সম্পাদন করেছিলেন৷ যে মুহুর্তে যোহন বাপ্তাইজক যীশু খ্রীষ্টের মস্তকে হস্তার্পণ করেছিলেন, সেই মুহুর্তেই ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুযায়ী সকল পাপ তাঁর প্রতি স্থানান্তরিত হয়ে গিয়েছিল৷

তৃতীয়, তিনি আমাদের পাপের মোচনের জন্য ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন৷ তাঁর শেষ নিঃশ্বাসের পূর্বে তিনি বলেছিলেন, “সমাপ্ত হইল!” (যোহন ১৯:৩০)৷ তিনি আমাদের পাপের মূল্যরূপে তাঁর সব রক্ত ঝরিয়েছিলেন৷ এবং তিনি তৃতীয় দিনে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন ও স্বর্গারোহন করেছিলেন৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্তের সাহায্যে জগতের সকল পাপ সম্পূর্ণভাবে মুছে দিয়েছিলেন৷

প্রেরিত পৌল বলেছেন, “শাস্ত্রানুসারে খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরিলেন” (১ করিন্থীয় ১৫:৩)৷ এখন, আপনারা কি বুঝতে পারছেন যে পুরাতন নিয়মে পাপের মোচনের জন্য কিভাবে বলিদানের পশু উত্সর্গ করা হত, এবং কেন সেটি আগামী দিনের উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়া?

হোমবলির পশুকে হত্যা করবার পূর্বে “হস্তার্পণ” করতে হত৷ যদি কেউ একটি পাপার্থক বলিদান উত্সর্গ করবার সময়ে “হোমবলির উপরে হস্তার্পণ” সম্পাদন করতে ব্যর্থ হত, তাহলে সেই ব্যক্তি তার ব্যবস্থাবিহীনতার কারণে পাপের ক্ষমা প্রাপ্ত করতে পারত না৷ ঈশ্বর কখনই ওই ধরনের ব্যবস্থাহীন নৈবেদ্য গ্রহণ করেন নি৷ একটি বলিদান উত্সর্গ করবার সময়ে “হোমবলির উপরে হস্তার্পণ” সম্পাদন করতে ব্যর্থ হওয়াটি ঈশ্বরের ব্যবস্থার বিরোধী ছিল৷

যীশু তাঁর ধার্মিকতার কার্যের দ্বারা আমাদের সকল পাপ ধৌত করার জন্য এই জগতে এসেছিলেন (রোমীয় ৫:১৮)৷ তাঁর ধার্মিকতার কার্য এই যে তিনি জগতের পাপ লাঘব করবার উদ্দেশ্যে যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত এবং পাপের মূল্য পরিশোধ করবার জন্য ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্ত দিয়ে এসেছিলেন৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ, অধিকাংশ খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা তাঁর ধার্মিকতার কার্যের অর্দ্ধেক অংশ জানে৷ আমাদের জল ও আত্মার সুসমাচারের সম্পূর্ণ অংশ জানা উচিত৷ তাঁর সুসমাচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে তাঁকে বিশ্বাস করাটা ব্যবস্থাহীনতা ও অকার্যকর৷

প্রেরিত যোহন তার প্রথম পত্রে যীশুর সুসমাচারের সম্পূর্ণ অংশকে পরিস্কার করেছেন৷ “তিনি সেই, যিনি জল ও রক্ত দিয়া আসিয়াছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট; কেবল জলে নয়, কিন্তু জলে ও রক্তে” (১ যোহন ৫:৬)৷

আমরা পাপময় প্রকৃতিতেই জন্মগ্রহণ করি, এবং শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পাপ করি৷ আমরা পাপ না করে পারি না এবং আমরা ঈশ্বরের বিচার এড়াতে পারি না৷ আমাদের সমগ্র মানবজাতি নরকের পথে ধাবিত৷ “কারণ পাপের বেতন মৃত্যু” (রোমীয় ৬:২৩)৷ “কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল”, “'কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়” (রোমীয় ৫:২০, যোহন ৩:১৬)৷

ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে ঈশ্বরের মেষশাবকরূপে এসেছিলেন৷ যর্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হওয়ার সময় তিনি জগতের সকল পাপ গ্রহণ করেছিলেন৷ সকল মানবজাতির প্রতিনিধিরূপে, যোহন বাপ্তাইজক যীশুর মস্তকে তার হস্তার্পণ করেছিলেন, আর সেই মুহুর্তে জগতের সকল পাপ যীশুর উপরে চলে গিয়েছিল৷ এইভাবে যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা আমাদের সকল পাপ গ্রহণ করেছিলেন ও সে সকলকে ক্রুশে বহন করে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ তিনি আমাদের পাপের মূল্যরূপে তাঁর পবিত্র রক্তের সমস্তটাই সেচন এবং সম্পূর্ণভাবে জগতের সকল পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছিলেন৷

সুতরাং, ক্রুশে তাঁর শেষ নিঃশ্বাসের পূর্বে তিনি উচ্চস্বরে বলেছিলেন, “সমাপ্ত হইল!” যীশুর দ্বারা কি সমাপ্ত হয়েছিল? তাঁর ধার্মিকতার কার্যের দ্বারা সমস্ত পাপ ও সেই সবের দন্ড সমাপ্ত হয়েছিল, অন্য কথায়, তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় মৃত্যুর দ্বারা আমরা আমাদের কৃত সকল পাপের ক্ষমা পেয়েছি৷ যীশু খ্রীষ্ট প্রায় ২০০০ বছর আগে জগতের সকল পাপ মুছে দিয়েছিলেন, এবং একটি নুতন ও জীবন্ত পথ পৃথক করেছেন (ইব্রীয় ১০:২০)৷ এখন তাঁর অনুগ্রহের যুগ৷ যে কেউ তাঁর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করে সে তার সকল পাপের ক্ষমা পেতে পারে, এবং পবিত্র আত্মার নিবাসস্থল প্রাপ্ত করতে পারে (প্রেরিত ২:৩৮)৷ হাল্লেলুইয়া!

এর বেশি আমরা আর কি বলব! বাইবেলে এমন অসংখ্য বাক্য রয়েছে যা আমাদের পরিত্রাণের নিমিত্ত যীশুর বাপ্তিস্মকে তাঁর অপরিহার্য ধার্মিকতার কার্য বলে বর্ণনা করে (মথি ৩:১৩-১৭, ১ পিতর ৩:২১, যোহন ৬:৫৩-৫৫, ইফিষীয় ৪:৫, গালাতীয় ৩:২৭, প্রেরিত ১০:৩৭ ইত্যাদি)৷

আপনারা কি এই সত্যে বিশ্বাস করেন? আপনাদের হৃদয়ে কি কোনো পাপ নেই? আপনাদের জন্মাবধি এখন পর্যন্ত সমস্ত পাপ কি যীশু গ্রহণ করেছেন? তিনি কি ২০০০ বছর আগে তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে এই মুহূর্ত থেকে আপনাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সকল পাপ গ্রহণ করেছেন? তাহলে আপনারা কি তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাসের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে শুচিশুদ্ধ?

আজকে খ্রীষ্টধর্মের উচিত জল ও আত্মার সুসমাচারের পুনরুদ্ধার করা৷ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের সম্পর্কে অধিক জানতে ইচ্ছুক, তারা দি নিউ লাইফ মিশনের সাথে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না৷ আপনারা বিনামূল্যে রেভা: পল সি. জং-এর বই/ই-বুক পেতে পারেন৷