Search

শিক্ষা

বিষয় ১১: আবাস

[3-2] যারা তাদের শুক্ল বস্ত্র মলিন করেনি (প্রকাশিত বাক্য ৩:১-৬)

যারা তাদের শুক্ল বস্ত্র মলিন করেনি
< প্রকাশিত বাক্য ৩:১-৬ >
 
এই অংশটি এখানে বলছে, “তথাপি সার্দ্দিতে তোমার এমন কয়েকটী লোক আছে, যাহারা আপন আপন বস্ত্র মলিন করে নাই; তাহারা শুক্ল পরিচ্ছদে আমার সহিত গমনাগমন করিবে; কেননা তাহারা যোগ্য।” শুক্ল পরিচ্ছদে গমনাগমন বলতে বোঝায় ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তারা তাদের বিশ্বাসে আত্মসমর্পিত৷
যারা বিশ্বাসে সবলতা ধরে রাখে, ঈশ্বর তাদের সাথে গমনাগমন করেন৷ তিনি কখনও তাদের একাকী ত্যাগ করবেন না, কিন্তু সর্বদা তাদের সাথে থাকবেন ও আশীর্বাদ করবেন৷
যারা পবিত্র আত্মায় চলে এই পৃথিবীতে তারা ধার্মিক৷ তাদের নাম জীবন পুস্তকে লেখা হয়েছে এবং অনন্তকাল অনন্ত জীবনযাপনের জন্য তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ ধার্মিকতার শুক্ল বস্ত্রে আবৃত হয়ে এবং সর্বদা তাদের সঙ্গে থেকে ঈশ্বর শয়তানের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধে সর্বদা জয়লাভ করা সম্ভব করেছেন৷
 
 

এমন একজন হন, যিনি শয়তানের উপরে বিজয়ী

 
এমন একজন হন যিনি শয়তানের উপরে জয়ী, আমরা প্রথমে পরিত্রাণের বাক্যে বিশ্বাস করব, যা প্রভু আমাদেরকে প্রদান করেছেন৷ এরূপে, আসুন বাক্যের কাছে ফিরে আসি এবং দেখি প্রভু কিভাবে জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদেরকে রক্ষা করেছেন৷
 আসুন, লূক ১০: ২৫-৩৫ পদ দেখার মাধ্যমে শুরু করি৷ “আর দেখ, এক জন ব্যবস্থাবেত্তা উঠিয়া তাঁহার পরীক্ষা করিয়া কহিল, হে গুরু, কি করিলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হইব? তিনি তাহাকে কহিলেন, ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? কিরূপ পাঠ করিতেছ? সে উত্তর করিয়া কহিল, “তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে, এবং তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” তিনি তাহাকে কহিলেন, যথার্থ উত্তর করিলে; তাহাই কর, তাহাতে জীবন পাইবে। কিন্তু সে আপনাকে নির্দ্দোষ দেখাইবার ইচ্ছায় যীশুকে বলিল, ভাল, আমার প্রতিবাসী কে? এই কথা লইয়া যীশু বলিলেন, এক ব্যক্তি যিরূশালেম হইতে যিরীহোতে নামিয়া যাইতেছিল, এমন সময়ে দস্যুদলের হস্তে পড়িল; তাহারা তাহার বস্ত্র খুলিয়া লইল, এবং তাহাকে আঘাত করিয়া আধমরা ফেলিয়া চলিয়া গেল। ঘটনাক্রমে এক জন যাজক সেই পথ দিয়া নামিয়া যাইতেছিল; সে তাহাকে দেখিয়া এক পার্শ্ব দিয়া চলিয়া গেল। পরে সেইরূপ এক জন লেবীয়ও সেই স্থানে আসিয়া দেখিয়া এক পার্শ্ব দিয়া চলিয়া গেল। কিন্তু এক জন শমরীয় সেই পথ দিয়া যাইতে যাইতে তাহার নিকটে আসিল; আর তাহাকে দেখিয়া করুণাবিষ্ট হইল, এবং নিকটে আসিয়া তৈল ও দ্রাক্ষারস ঢালিয়া দিয়া তাহার ক্ষত সকল বন্ধন করিল; পরে আপন পশুর উপরে তাহাকে বসাইয়া এক পান্থশালায় লইয়া গিয়া তাহার প্রতি যত্ন করিল। পরদিবসে দুইটী সিকি বাহির করিয়া পান্থশালার কর্ত্তাকে দিয়া বলিল, এই ব্যক্তির প্রতি যত্ন করিও, অধিক যাহা কিছু ব্যয় হয়, আমি যখন ফিরিয়া আইসি, তখন পরিশোধ করিব।”
এই অনুচ্ছেদে দুটি প্রধান চরিত্র দেখতে পাই: যীশু এবং ব্যবস্থাবেত্তা৷ এই ব্যবস্থাবেত্তা ব্যবস্থায় তার বিশ্বস্ততার গর্ব করে যীশুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “ হে গুরু কি করিলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হইব?” এই প্রশ্ন থেকে আমি কি ধরনের অনুভুতি পেলেন? 
প্রশ্নে ব্যবস্থাবেত্তা ভেবেছিলেন যে, তিনি আক্ষরিক অর্থে পালন করার দ্বারা ব্যবস্থা পালন করতেন৷ কিন্তু ঈশ্বর মানবজাতিকে তাঁর ব্যবস্থা দিয়েছেন যাতে লোকেরা তাদের হৃদয়ের পাপ চিনতে পারে৷ ঈশ্বরের ব্যবস্থা মানুষের মৌলিক পাপ উন্মোচিত করে এবং প্রকাশ করে দেয়৷ তাদের হৃদয়ে মন্দ চিন্তা, অসৎ মন, হত্যার, চুরির, মিথ্যা সাক্ষের মন পাওয়া যায়৷ উন্মাদের মন এবং আরো অনেক কিছু৷ অতএব, ব্যবস্থাবেত্তার হৃদয়ে পাপ চিহ্নিত করতে আমাদের প্রভু তাকে ফিরে আসতে বললেন, “ ব্যবস্থায় কি লেখা আছে, কিরূপ পাঠ করিতেছ?”
আমাদের প্রভু ব্যবস্থাবেত্তার হৃদয়ে পাপের মৌলিক উপস্থিতি চেনাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু যে যীশুকে নিজের ধার্মিকতায় দম্ভে আন্তরিকভাবে জিজ্ঞাসা করল, “অনন্ত জীবনের অধিকারী হতে হলে আমাকে কি করতে হবে?” তার কথা থেকে আমরা দেখতে পাই, ব্যবস্থাবেত্তা ভেবেছিল: “আমি আজ অবধি ব্যবস্থা পালন করেছি এবং ভবিষ্যতেও আমি পালন করতে পারব৷”
কিন্তু আমাদের অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে যে, ঈশ্বর দেয় ব্যবস্থা কেবল ঈশ্বর নিজেই পালন করতে পারেন, আর এমন একজনও নেই যে সম্পূর্ণভাবে ব্যবস্থা পালন করতে পারে৷ অতএব একজন মানুষ শুধু প্রভুর সম্মুখে হঠকারিতা অথবা গর্ব প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালনের চেষ্টা করতে পারে৷ আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, আমরা পাপী, যারা কখনই ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে পারে না৷
আমরা কতটুকু ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, আমাদের সকলের জন্য সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ যখন আমরা ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের অভিপ্রায় সম্পর্কে সচেতন হয়ে পড়তে হবে৷ আমরা যদি ঈশ্বরের অভিপ্রায় সম্পর্কে সচেতন না হয়ে ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, আমাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের নির্দেশনার বিপরীতে চালিত হতে পারে৷ এর কারণ অনেক সম্প্রদায় আছে, যাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের সাথে যুক্ত, তারা প্রায়ই পতিত হয়৷
যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারা যখন বাইবেল পড়ে, তারা সত্যই বুঝতে পারে ঈশ্বরের ইচ্ছা কি৷ যখন কেউ ঈশ্বর দেয় জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস ব্যতীত বাইবেল পড়ে, তাহলে এটা মহা ভুলের কারণ হতে পারে এবং যত কঠোরভাবে সে (নারী/পুরুষ) বাইবেল অধ্যয়ন করুক না কেন, বাইবেলের ভাষায় যাকে বিশ্বাস বলে, এরূপ লোকেদের সেটি নেই৷ 
 
 
ব্যবস্থায় কি লেখা আছে?
 
লূকের অনুচ্ছেদ থেকে দেখতে থাকি: “তিনি তাহাকে কহিলেন, ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? কিরূপ পাঠ করিতেছ? সে উত্তর করিয়া কহিল, “তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে, এবং তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” 
রোমীয় ৩ অধ্যায় ২০ পদে বলা হয়েছে, “যেহেতু ব্যবস্থার কার্য দ্বারা কোনো প্রাণী তাঁহার সাক্ষাতে ধার্ম্মিক গণিত হইবে না, কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে৷” বাইবেল আরো বলে, “বাস্তবিক যাহারা ব্যবস্থার ক্রিয়াবলম্বী, তাহারা সকলে শাপের অধীন, কারণ লেখা আছে, “যে কেহ ব্যবস্থা গ্রন্থে লিখিত সমস্ত কথা পালন করিবার জন্য তাহাতে স্থির না থাকে, সে শাপগ্রস্ত”” (গালাতীয় ৩:১০)৷
আমরা যারা ইতিমধ্যে পাপী হয়ে জন্মগ্রহণ করেছি, ব্যবস্থা শুধু আমাদেরকে আরো বড় পাপীই তৈরী করে না, কিন্তু আমাদের কর্মের ত্রুটি বিচ্যুতিও প্রকাশ করে৷ সেই কারণেই, “যে কেহ ব্যবস্থা গ্রন্থে লিখিত সমস্ত কথা পালন করিবার জন্য তাহাতে স্থির না থাকে, সে শাপগ্রস্ত”
কিছু লোক বলে যে,একজন স্বর্গে প্রবেশ করতে পারে, যদি সে (নারী/পুরুষ) ঈশ্বরে বিশ্বাস করে এবং ভালোভাবে ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে, এবং সেই জন্য একজনকে ব্যবস্থা পালন করতে কঠোরভাবে চেষ্টা করতে হয়৷ এই লোকেরা যীশুতে বিশ্বাসও করে ও ব্যবস্থা পালন করার চেষ্টা করতে করতে সারাটা জীবন ব্যয় করে চলেছে৷ কিন্তু বস্তুতঃ, তারা ব্যবস্থার দন্ডাজ্ঞার অধীনে থাকে৷ ব্যবস্থা পালনের ব্যর্থ চেষ্টার বিশ্বাসের গন্ডির মধ্য থেকে যারা মুক্ত হতে অসমর্থ, তারা যীশুতে বিশ্বাস করেও পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে না৷ তারা হয়তো যীশুতে বিশ্বাস করে, কিন্তু তারা ঈশ্বরের সম্মুখে পাপী রয়ে যায় এবং ঈশ্বরের সম্মুখে পাপীরা শুধুমাত্র ভয়াবহ বিচারের সম্মুখীন হয়৷ এ কারণেই যীশু, যিনি ঈশ্বর, এবং আমাদের ত্রাণকর্তা রূপে আমাদের কাছে এসেছিলেন এবং পাপীদের মুক্তিদাতা হয়েছিলেন৷ অন্যকথায়, বিশদভাবে বলতে গেলে, যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ 
আপনি কি জানেন যে, বাপ্তিস্ম পরিত্রাণের একটি চিহ্ন, যা আমাদের সমস্ত পাপ পরিস্কার করে? যীশুর বাপ্তিস্মই একমাত্র পদ্ধতি যা ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ পরিস্কার করতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷
মথি ৩:১৫ পদে বাইবেল আমাদেরকে বলছে, “কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন” এখানে “এইরূপে” শব্দটির এর মূল ভাষার অর্থ, “সবচেয়ে উপযুক্ত” বা “সবচেয়ে যথার্থ”৷ অন্যকথায়, এটা যীশুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত এবং যথার্থ ছিল যে, যোহন কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার মাধ্যমে যীশু সমস্ত পাপ তাঁর উপর তুলে নিলেন৷ সংক্ষেপে বলা যায়, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ ক্রুশে মৃত্যুবরণ এবং বাপ্তাইজিত হওয়ার মাধ্যমে যীশু আমাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন৷ লোকেরা যখন এই সঠিক সত্য জানে এবং মিথ্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, ঈশ্বর তখন তাদেরকে বিজয়ীর ন্যায় আহ্বান করেন৷
 
 

কাদের বিপক্ষে নূতন জন্ম প্রাপ্তরা যুদ্ধ করবেই?

 
নূতন জন্ম প্রাপ্তরা ব্যবস্থানুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেই এবং বিজয়ী হবে৷ ধর্মীয় পর্যায়ে, ব্যবস্থাবেত্তাদের বাহ্যিক রূপ ভালো হতে পারে, কিন্তু অন্তরের গভীরে তারা ঈশ্বর বিরোধী৷ তারা ধার্মিক হিসাবে আবির্ভূত হয়, তাদের বাক্য বস্তুতঃ শয়তানের বাক্য, যা তাদের অনুসারীদের পাপের অধীনে রাখে৷ এ কারণেই সাধুরা এই সব ধর্মবেত্তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যুদ্ধ করবে এবং বিজয়ী হবে৷ 
ধর্মবেত্তারা দাবি করে যে, যীশুতে বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ আসে, কিন্তু তারা আরো দাবি করে যে যখন কেউ (নারী/পুরুষ) ব্যবস্থার সম্মুখে ধার্মিক জীবনযাপন করে, সে স্বর্গে প্রবেশ করতে পারে৷ এই বিশ্বাসকে কি সেই বিশ্বাস বলা যেতে পারে, যা একজনকে রক্ষা পেতে পরিচালিত করে? অবশ্যই না!
সুতরাং প্রভু ব্যবস্থানুসারীদের এবং আমাদেরকে এই বিষয়ের উপরে আলোকপাত করতে দৃষ্টান্ত হিসাবে ব্যবহার করেছেন৷ এই রকম একটা গল্প আছে: কোনো এক লোক যিরূশালেম থেকে যিরীহোতে নেমে যাচ্ছিল এবং দস্যু দলের হাতে পড়ল, তারা তাকে আঘাত করে আধমরা করে ফেলে চলে গেল৷ একজন যাজক সেই পথে যিরূশালেম থেকে যিরীহোতে নেমে যাচ্ছিল এবং সে সেই আঘাতপ্রাপ্ত লোকটির কাছে আসল৷ কিন্তু সেই যাজক তাকে সাহায্য করল না, পরিবর্তে অন্য পাশ দিয়ে চলে গেল৷ সেই সময় একজন লেবীয় সেই আঘাতপ্রাপ্ত লোকটির কাছে আসল, কিন্তু সেও বেচারী লোকটির আর্ত্তনাদ ন শোনার ভান করে তার পাশ দিয়ে চলে গেল৷
তখন তৃতীয় ব্যক্তি, একজন শমরীয় সেই পথে আসল৷ শমরীয় লোকটি সেই যাজকও লেবীয়র মত নয়, সে তৈল এবং দ্রাক্ষারস দিয়ে তার ক্ষতস্থান বেঁধে দিল এবং তার পশুর উপর চড়িয়ে তাকে একটি পান্থশালায় নিয়ে গেল এবং তার যত্ন নিল। এমনকি সে পান্থশালার মালিককে টাকা দিয়ে বলল, “ওনার ভালো যত্ন নেবেন৷ যদি তাকে সুস্থ করতে যদি আরো অর্থ হয়, তবে আমি যখন ফিরে আসব, তখন পরিশোধ করব৷ সুতরাং এই লোকটিকে সুস্থ করতে যা করার প্রয়োজন তাই করুন৷”
এই তিন জনের মধ্যে কে উত্তম? অবশ্যই শমরীয় লোকটি৷ এই শমরীয় লোকটি দ্বারা যীশুকে নির্দেশ করা হয়েছে৷ যিনি আমাদের মত পাপীদের মুক্ত করেছেন, না ঈশ্বরের ব্যবস্থা, না এর শিক্ষাগুরুরা, না এর নেতারা, যা আমাদের নিজেদের শক্তির এবং ইচ্ছার বাইরে অথবা অনুতাপের প্রার্থনার দ্বারা নয়৷ একমাত্র যীশু যিনি আমাদের পাপ সকল পরিস্কার করতে জগতে এসেছিলেন, তিনিই প্রকৃত ত্রাণকর্তা৷ যীশু “এভাবে (মথি ৩:১৫)” সমস্ত পাপীদের মুক্ত করেছেন৷ যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত পাপীদের পরিত্রাণের চিহ্ন (১ পিতর ৩:২১) যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশের দ্বারা পৃথিবীর সমস্ত পাপী রক্ষা পেয়েছে৷ যারা যর্দ্দন নদীতে যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তকে তাদের পরিত্রাণ হিসাবে বিশ্বাস করে, তারা সম্পূর্ণ এবং পরিপূর্ণভাবে তাদের সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পায়৷ 
যীশু আমাদিগকে ভ্রান্ত মতবাদ এবং অসত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এবং বিজয়ী হতে শক্তি প্রদান করেছেন৷ যখন লোকেরা দাবি করে, “আমরা যীশুতে বিশ্বাস করি, কিন্তু যদি আপনি ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করেন এবং আপনার কাজ উত্তম হয়, তাহলে আপনি আপনার সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হবেন,” তারা শুধু তাদের মিথ্যা প্রচারণা এবং একগুঁয়েমি প্রদর্শণ করেছে৷ যীশু দ্বারা আমাদের পরিত্রাণের সত্যে আপনি যদি কোনো কিছু যোগ বা বিয়োগ করেন, তাহলে তা কখনই সত্য হবে না৷ যীশু আমাদেরকে এই সমস্ত অসত্য এবং ভ্রান্ত মতবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এবং বিজয়ী হওয়ার ক্ষমতা প্রদান করেছেন৷ 
আজকের ব্যবস্থাবেত্তারা লোকজনের সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলে, যেন তারা ভালোভাবে ব্যবস্থা পালন করে৷ কিন্তু প্রায়ই দেখতে পাই যখন তারা কোথাও কোনো অবস্থার সম্মুখীন হয়, তারা তাদের কথামত কাজ করে না, যদিও কঠিন, তথাপি তাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, ব্যবস্থা তাদের কাছে কি দাবি করে৷ তারা নিজেদেরকে অনুধাবন করায় যে, যদিও তারা হৃদয়ে ভালো কিছু করতে চায়, তারা তা করতে পারে না, এর কারণ হচ্ছে তাদের মাংসিক দুর্বলতা৷ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় নিজেদেরকে ঢাকতে এবং দুর্বলতা লুকানোর দ্বারা তারা অন্যদেরকে প্রতারিত করে এবং তাদেরকে বোঝা হিসাবে পরিমাপ করে৷
উপরে উল্লিখিত যাজক ও লেবীয়র মত আজকের ব্যবস্থানুসারীদের ত্যাগস্বীকারের সাক্ষ্য সাধারনভাবে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার মত দ্বিগুন মান সম্পন্ন৷ এটাই ঈশ্বরের ব্যবস্থার সম্মুখে একটি মানুষের ক্ষমতাহীনতা৷ লোকেরা এগুলোকে সুন্দর পোশাকের দ্বারা আবৃত করে যাকে ধর্ম বলা হয়৷ কিন্তু ঈশ্বরের সম্মুখে যারা নিজেদেরকে লুকায়, তারা রক্ষা পাবে না৷ একমাত্র ব্যবস্থার পরিমাপের মাধ্যমে তাদের সত্য প্রকাশ করার দ্বারা তাদের পাপের পূর্ণতা চিনতে পারে, তারা জল ও আত্মার সত্যের বাক্যের দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে৷
একমাত্র যীশুই পাপে মৃতদের পাশ কাটিয়ে চলে যান না এবং একমাত্র তিনি তাদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং খুঁজে আনার মাধ্যমে তাদের রক্ষা করেন৷ ব্যক্তিগতভাবে বাপ্তিস্মের দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে স্থানান্তরিত করেছেন, এবং তাঁর নিজের দেহ দ্বারা মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে তিনি পাপে মৃতদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন৷ এইভাবে যীশু সমস্ত পাপীদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন৷ 
 
 
যারা জয় করে তারা শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হবে
 
অনুচ্ছেদটি আমাদের বলছে যে, তারা জয় করে তারা শুক্লবস্ত্র পরিহিত হবে৷ এর অর্থ হল আমরা অবশ্যই খ্রীষ্টিয়ান জগতের মধ্যে মিথ্যাবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব এবং জয় লাভ করব৷ এমনকি বর্তমানে আমরা যেভাবে বলি, এই মিথ্যাবাদীরা লোকদেরকে উত্তমতায় জীবনযাপন এবং যীশুতে বিশ্বাস করতে শিক্ষা দেয়৷ উত্তমতায় জীবনযাপন করা অবশ্যই এটা করা ঠিক৷ কিন্তু মৌলিকভাবে, মানুষের হৃদয় সমস্ত প্রকারের নোংরা জিনিস, নরহত্যা থেকে ব্যভিচার, চুরি এবং হিংসায় পরিপূর্ণ; তারা এইভাবে লোকেদের বলছে উত্তম জীবনযাপন করতে, যদিও তারা বলছে এটাই ঠিক যা ধর্মকে খাঁটি করতে তাদেরকে অবরুদ্ধ করার সমান, এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করার মত৷ উত্তম জীবনযাপন করতে যাদের পাপ গলা পর্যন্ত স্তুপীকৃত হয়ে আছে, লোকেদের একথা বলে তাদেরকে নিজেদের দম্ভতায় ঠেলে দিচ্ছে৷
এরূপে, জল ও আত্মার সত্য তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার দ্বারা তাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করতে আমাদের নিকট থেকে আসলে তাদের কি প্রয়োজন, যা আদি পাপ থেকে মুক্ত করতে পারে৷ এটাই সঠিক শিক্ষা এবং এই শিক্ষার পরেই আসে ঈশ্বরের উত্তম জীবনযাপন করার উপদেশ৷ অন্যভাবে বলতে গেলে, যারা এখনও পাপী হিসাবে যীশু খ্রীষ্টের বাইরে আছে, তাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, জল ও আত্মার সুসমাচার তাদের মাঝে প্রচার করার মাধ্যমে তাদেরকে ধার্মিক করা৷
 
 
খ্রীষ্টিয়ান ধর্মকে পার্থিব ধর্মে অবমূল্যায়ন
 
আমরা অবশ্যই পার্থিব ধর্ম দ্বারা প্রতারিত হব না৷ শুধুমাত্র যখন আমরা পার্থিব ধর্মের বিরুদ্ধে যা মিথ্যা প্রচার করে যুদ্ধ করি ও বিজয়ী হই, তখন আমরা স্বর্গে যেতে পারি৷ কারণ আমরা ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালনে অক্ষম, আমাদের পরিত্রাণের অনুগ্রহ আবশ্যক, যা যীশু আমাদেরকে প্রদান করেছেন, আর একমাত্র এই অনুগ্রহে বিশ্বাস দ্বারাই আমরা প্রভুর সাথে মিলিত হতে পারি৷
কিন্তু খ্রীষ্টীয় জগতে অনেকেই, যদিও তারা যীশুতে বিশ্বাস করে, ভ্রান্ত প্রচারকারীরা তাদেরকে নরকে টেনে নিয়ে যায়, প্রতারিত করে এবং ভুল পথে চালিত করে৷ তারা এই সম্মোহিত ধারণা দ্বারাই প্রতারিত হয় যে, মানুষ ভালো হতে পারে এবং অবশ্যই হয়৷ কিন্তু কারণ হল, আমরা মৌলিকভাবে পাপ নিয়েই জন্মগ্রহণ করি, যত কঠোর চেষ্টা করি না কেন আমরা কখনই ভালো হতে পারি না৷ এইরূপে, আমরা শুধুমাত্র সত্য সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা রক্ষা পেতে পারি, যা হল যীশু তাঁর জল ও আত্মা দ্বারা আমাদেরকে রক্ষা করেছেন৷ আমরা শুধুমাত্র তখনই নূতন জীবন যাপন করতে পারি, যখন আমরা জানতে পারি যে, এই সত্যে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা নিস্পাপ হয়ে যাই৷
বাইবেলের ফরীশী এবং আজকের অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানরা, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পাপ থেকে পরিস্কৃত নয়, তারা এই – তারা সবাই ধর্মবিরোধী৷ বাইবেলে যেমন লিপিবদ্ধ রয়েছে, ফরীশীরা ঈশ্বরের আত্মার পুনরুত্থান এবং ভবিষ্যতের জীবনে বিশ্বাস করে৷ কিন্তু যীশুকে তাদের মসীহ হিসাবে বিশ্বাস করে না৷ অধিকন্তু, তারা যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তকে অবজ্ঞাভরে পদদলিত এবং অগ্রাহ্য করে৷
আজকে, অনেক খ্রীষ্টিয়ানরা ঠিক এই ফরীশীদের মত৷ তাদের বাইবেলের চাইতে খ্রীষ্টীয় মতবাদকে বেশি জানার প্রবণতা রয়েছে৷ এ কারণে আজকাল এতবেশী ধর্ম বিরোধীর উদয় হচ্ছে৷ তীত ৩:১০-১১ পদে ধর্ম বিরোধীদের সমন্ধে আমাদেরকে বলা হয়েছে, “ যে ব্যক্তি দলভেদী, তাহাকে দুই এক বার চেতনা দিবার পর অগ্রাহ্য কর, জানিও, এরূপ ব্যক্তি বিগড়াইয়া গিয়াছে, এবং সে পাপ করে, আপনি আপনাকেই দোষী করে৷” যারা ধর্ম বিরোধীদের বিশ্বাসে বিশ্বাস এবং তাদের ধর্মগুরুদের বাইবেলের চেয়ে বেশি মান্য করে, তার ফলে তারা সবাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে৷
পূর্বের ন্যায় বর্তমানে, অনেক ভাক্ত ভাববাদী এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছে৷ মূল অনুচ্ছেদের বাক্য অনুযায়ী ঈশ্বর এইভাবে আমাদেরকে বলেন যে, প্রত্যেকে অবশ্যই এই সমস্ত ভাক্ত ভাববাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং বিজয়ী হবে৷ তিনি আরও বলেছেন, যারা জয় করে শুধু তারাই ধার্মিকতার বস্ত্র পরিহিত হবে৷
লূক ১৮ অধ্যায়ে পাই, “ফরীশী এবং করগ্রাহীর দৃষ্টান্ত”৷ একজন ফরীশী ধর্মধামে গেল, তার হস্ত উত্তোলন করল এবং দাম্ভিকতার সাথে প্রার্থনা করল: “ ঈশ্বর আমি সপ্তাহে দুইদিন উপবাস করি এবং আমার উপার্জনের দশমাংশ দিই৷” বিপরীতে করগ্রাহীটি যখন প্রার্থনা করছিল, সে উর্দ্ধের দিকে তার মুখ তুলতে পারল না: “হে ঈশ্বর, সে যা করে, আমি তা করি না৷ আমি অনেক পাপে পাপী এবং সপ্তাহে দুবার উপবাস করতে পারি না, আর আমি দশমাংশ পর্যন্তও দিই না৷ শুধু তাই নয়, আমি মানুষকেও ঠকাই, তাদের থেকে চুরি করি, আরও অনেক মন্দ কাজ করি৷ আমি একজন মূল্যহীন মানুষ৷ আমার প্রতি দয়া কর৷ আমাকে অনুগ্রহ কর এবং রক্ষা কর৷”
বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, এই লোকটি করগ্রাহী ছিল, যে ঈশ্বরের দ্বারা ফরীশীর চেয়ে ধার্মিক গণিত হয়েছিল৷ প্রশ্নের মধ্যে তা ভালো করে দেখানো হয়েছে, “কারা সম্ভাব্য পাপের ক্ষমা পেতে পারে?” এরা অন্য কেউ নয়, বরং যারা নিজেদের ত্রুটি-বিচ্যুতি উপলব্ধি করে, তারাই৷ যারা জানে যে, তারা পাপী, যে সমস্ত আত্মাগণ বুঝতে পারে যে, ব্যবস্থা বা ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিচার তাদের উপর আরোপ করা হলে নিঃসন্দেহে তারা নরকে যাবে- এরাই সেই মানুষ যারা যীশুর নিকট থেকে পাপ মোচনের পরিত্রাণ লাভ করে৷ 
মথি ৩: ১৫ পদে লেখা আছে যে, যীশু বাপ্তিস্মের ঠিক আগের মুহুর্তে কি বলেছিলেন৷ “এইভাবে” এর অর্থ হল, যীশুর বাপ্তিস্ম পাপীদের মুক্ত করার যথাযত উপায় ছিল, তা হল, যীশু বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে তাদের পাপ মুছে দিয়ে তাদেরকে মুক্ত করলেন, সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পিত হয়েছিল৷ 
আপনি কি এই ঘটনায় বিশ্বাস করেন যে, যীশু “এইভাবে” আপনাকে আপনার সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা করেছেন৷ প্রভু যখন বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন তখন তিনি “এইভাবে” আপনার সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন৷ এভাবে ক্রুশের উপরে পৃথিবীর সমস্ত পাপ বহন করেছিলেন এবং তাঁর নিজের রক্ত দ্বারা এই পাপসমূহের মূল্য পরিশোধ করেছিলেন৷ আপনার আত্মাকে বাঁচাতে হলে, আপনাকে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করতে হবে৷ যখন আপনি এটা বিশ্বাস করেন, তখন আপনার আত্মার প্রতিকার হয়, আর আপনি পুনরায় ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে জন্মগ্রহণ করেন৷ 
এখনও পৃথিবীতে অনেকে আছে, যারা জল ও আত্মার পরিত্রাণের সুসমাচারের সত্য প্রত্যাখ্যান করে৷ এ কারণে আমরা অবশ্যই আত্মিক যুদ্ধে যুদ্ধ করব৷ আমি বলছি না যে, আমাদের পাপকে চিনতে আরো বেশী অন্যায় করা উচিত, কিন্তু আমাদের নিজেদেরকে চেনার দ্বারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে আবৃত হওয়া উচিত, যেভাবে কেউ মৌলিকভাবে পাপ করতে এবং আত্মিকভাবে বিচারিত হতে বাধ্য থাকে৷ আপনাকে অবশ্যই এই বিষয় গ্রহণ করতে হবে যে, যীশু আমার ত্রাণকর্তা৷ প্রত্যেকে, যারা মুক্তি পেতে চায়, তাদেরকে যীশুর পাপমোচনে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে, যিনি আমাদের সকলের পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের স্থলে বিচারিত হয়েছেন৷ শুধুমাত্র তখনই একজনের হৃদয়ে আর কোনো পাপ থাকে না৷
এই মুহুর্তে আপনার হৃদয়ে কি পাপ রয়েছে? যারা ভাবে যে, তাদের হৃদয়ে পাপ আছে, তাদের অবশ্যই প্রথমে ব্যবস্থা জানতে হবে৷ ব্যবস্থানুযায়ী পাপের বেতন মৃত্যু৷ যদি আপনার পাপ থাকে, এবং আপনি তার প্রতিকার না করে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে আপনি বিচারিত এবং নরকে নিক্ষিপ্ত হবেন৷ কারণ এই পৃথিবীর প্রত্যেকেই পাপ না করে পারে না, ঈশ্বরের ব্যবস্থার সম্মুখে কেউই নরক এড়াতে পারে না৷ এই কারণে ঈশ্বর আমাদের উপরে দয়া করেছেন, এই পৃথিবীতে তাঁর একজাত পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে পাঠিয়ে আমাদেরকে রক্ষা করেছেন; যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্মের দ্বারা তাঁর উপরে “এভাবে ( মথি ৩:১৫)” সমস্ত পাপ তুলে নিলেন, এবং আমাদের স্থলে তাঁকে ক্রুশে বিচার করলেন, যেন তিনি আমাদেরকে স্বর্গে পাঠাতে পারেন৷
আমাদের উত্তম কাজের কারণে আমরা রক্ষা পেতে পারি না৷ লোকজনের হয়ত বিভিন্ন স্তরের ভন্ডামি থাকতে পারে, কিন্তু তা স্বত্তেও প্রত্যেকে এক একজন ভন্ড; এবং কেউই যথাযতভাবে উত্তমতায় পৌঁছাতে পারে না৷ অতএব, লোকেরা কেবল তখনই তাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে, শুধুমাত্র যখন তাদের পাপসমূহ খ্রীষ্টের প্রায়শ্চিত্তের পরিত্রাণে বিশ্বাসের দ্বারা ক্ষমা হবে৷ এটাই বাইবেলের সার সত্য৷ 
পৌল স্বীকার করে বর্ণনা করেছেন যে, প্রভুর সাথে সাক্ষাত হওয়ার পূর্বে তিনি কেমন ছিলেন, “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি” (রোমীয় ৭:১৯)৷ পৌল কেন এমন ছিলেন? কারণ মানুষ জাতি সাধারনভাবে কোনো ভাল কাজ করতে অক্ষম৷ প্রত্যেকে জানে যে, ভালো কাজ করা ঠিক, কিন্তু মৌলিকভাবে কেউ সেরূপ করতে সক্ষম নয়৷ এটা মাংসিক ইচ্ছায় সম্পূর্ণ একটি পৃথক ধাপ এবং মাত্রা, যা ধার্মিকদেরও থাকে৷ এ কারণে লোকেরা শুধুমাত্র সুসমাচারের সত্যে বিশ্বাসের দ্বারা রক্ষা পায়, যা প্রভু আমাদেরকে দিয়েছেন৷
ধার্মিক এবং নিস্পাপ ঈশ্বর কিভাবে আমাদের মত অপরিস্কার এবং নোংরা জীবকে গ্রহণ করেন? ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের কারণেই আমাদেরকে রক্ষা এবং আলিঙ্গন করেছেন৷ যোহন যিনি জগতের সবচেয়ে বড় প্রচারক, তার দ্বারা তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্য দিয়ে তিনি মানবজাতির সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, সেই সমস্ত পাপ ক্রুশে বহন করেছেন এবং আমাদের স্থলে বিচারিত হয়েছেন৷ আপনি কি যীশুতে বিশ্বাস করেন? যীশুকে বিশ্বাস করাই হল, তিনি আমাদের জন্য যা করেছেন তাতে বিশ্বাস করা৷
 
 

ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াবার উপায়

 
মানবজাতির প্রথম পিতা-মাতা আদম ও হবার মধ্য দিয়ে কয়িন এবং হেবল জন্মগ্রহণ করেছিল৷ যখন আদম ও হবা পাপ করেছিলেন, পরিবর্তে ঈশ্বর একটি প্রাণী মেরে এবং তার চামড়া দিয়ে তাদেরকে আচ্ছাদিত করেছিলেন৷ এটা মানবজাতিকে ঈশ্বরের দুটি শিক্ষা দেওয়া৷ একটা হল ঈশ্বরের বিচারের ব্যবস্থা, যেখানে “পাপের বেতন মৃত্যু”, এবং অন্যটি হল তাঁর প্রেমের ব্যবস্থা, যেখানে পাপীদের লজ্জাজনক পাপ আচ্ছাদন করতে ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন৷ আদম ও হবা শয়তানের দ্বারা প্রতারিত হয়ে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিল৷ তারা কত পাপ করেছিল সেদিন তারা সেদিকে তাকায় নি, তাদের মরতে হত ঈশ্বরের ব্যবস্থার সম্মুখে পাপের বেতন মৃত্যু৷ কিন্তু পরিবর্তে ঈশ্বর একটি প্রাণী মেরেছিলেন এবং সেটার চামড়া দিয়ে তাদের আচ্ছাদিত করেছিলেন৷ এটা ছিল বলি সংক্রান্ত আসবার পূর্বাভাস৷
আদম ও হবা পাপ করার পরে ডুমুর গাছের পাতা সেলাই করে তাদের জন্য বস্ত্র প্রস্তুত করেছিল৷ কিন্তু এই ডুমুর গাছ দীর্ঘস্থায়ী ছিল না, রোদ্রে শুকালে ভেঙ্গে যেত এবং তাদের নড়াচড়ার ফলে খন্ড-বিখন্ড হয়ে যেত, এভাবে সেটি তাদের লজ্জা ঢাকতে অক্ষম ছিল৷ সুতরাং আদম ও হবার নিমিত্তে ঈশ্বর একটি প্রাণী মেরে চামড়ার ঘাঘরার প্রস্তুত করেছিলেন এবং তাদেরকে পরিয়েছিলেন, যারা ডুমুর গাছের পাতা দিয়ে তাদের লজ্জা ঢাকবার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল৷ অন্যকথায়, ত্যাগস্বীকার প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর পাপীদের সমস্ত লজ্জা ঢেকে দিয়েছেন৷
এটা আমাদেরকে আমাদের জন্য ঈশ্বরের প্রেম এবং তাঁর ধার্মিকতার পরিত্রাণের কথা বলছে৷ আদম ও হবা বুঝতে পেরেছিল যে, ঈশ্বর তাদের পরিবর্তে প্রাণীটিকে মেরেছিলেন এবং যার জন্য তিনি নিজেই তাদের সমস্ত লজ্জা ঢেকে দিয়েছিলেন এবং রক্ষা করেছিলেন৷ পরে তারা এই বিশ্বাস তাদের সন্তানদের মধ্যে অতিবাহিত করেছিলেন৷
আদমের দুই পুত্র ছিল, কয়িন এবং হেবল৷ প্রথম পুত্র কয়িন নিজের শক্তি ও সমর্থ অনুসারে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ভূমির ফল উত্সর্গ করেছিল, হেবলও ঈশ্বরের প্রায়শ্চিত্তের ব্যবস্থা অনুসারে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রথমজাত মেষ উত্সর্গ করেছিল৷ ঈশ্বর কোনটি গ্রহণ করেছিলেন? এই দুইটি হচ্ছে পুরাতন নিয়মের যুগের সন্ধিক্ষণের ঘটনার চাবি, যেখানে বিশ্বাসের উত্সর্গ এবং মানুষের চিন্তার উত্সর্গের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে৷ ঈশ্বর হেবলের উত্সর্গ গ্রহণ করেছিলেন৷ বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, ঈশ্বর কয়িনের উত্সর্গীকৃত ভূমির ফল এবং তার পরিশ্রম ও ঘাম গ্রহণ করেন নি, কিন্তু পরিবর্তে তিনি হেবলের উত্সর্গীকৃত প্রথমজাত মেষ ও তাদের মেদ গ্রহণ করেছিলেন৷
বাইবেল বলে, “ আর হেবল আপন পালের প্রথমজাত কয়েকটি পশু ও তাদের মেদ উত্সর্গ করিল৷” ঈশ্বর সন্তুষ্ট হয়ে হেবলের উত্সর্গ ও তার বলিদান গ্রহণ করেছিলেন৷ এই বাক্য থেকে অবশ্যই পড়তে সক্ষম হই যে, ঈশ্বরের হৃদয় আমাদের থেকে কি প্রত্যাশা করে৷
ঈশ্বর আমাদের কিভাবে গ্রহণ করবেন? প্রতিদিন আমরা তাঁর সম্মুখে প্রচুর পাপ করি; কিভাবে আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াতে পারি? একমাত্র একটি পথের মধ্য দিয়েই আমরা ঈশ্বরের কাছে যেতে পারি, একমাত্র একটি পথই আছে যা ঈশ্বর আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন৷ এটা “উত্সর্গ” নিবেদনের মাধ্যমে আমাদের “কাজ” উত্সর্গের মাধ্যমে নয়, কিন্তু আমাদের “বিশ্বাস” উত্সর্গের মাধ্যমে৷ ঈশ্বর যা প্রত্যাশা করেন, এটা তাই৷ 
সেই বিশ্বাসটি কি ছিল যা, আদম ও হবা তাদের সন্তানদের মধ্যে অতিবাহিত করেছিলেন? এটা ছিল “চামড়ার ঘাগরার” বিশ্বাস৷ ভিন্নভাবে, এটা ছিল এমন বিশ্বাস যা, ত্যাগস্বীকারের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্তের বিশ্বাস৷ আজকে, এটাই যীশুর রক্ত এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস: “আমি বিশ্বাস করি যে, যীশুর বাপ্তিস্ম ও জল দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে৷ এবং এইজন্য আমি আমার উপহার হিসাবে এই বিশ্বাস উত্সর্গ করছি৷ আমি বিশ্বাস করি যে, প্রভু, যখন বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন আমার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ আমি বিশ্বাস করি যে আমার সমস্ত পাপ যীশুতে চলে গেছে৷ পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী যীশু বলির মেষ হয়ে এবং আমার জন্য মৃত্যুবরণ করার দ্বারা আমাকে পাপহীন করেছেন৷ আমি এই পরিত্রাণে বিশ্বাস করি৷” 
প্রভু আমাদের এভাবে রক্ষা করেছেন, এটা বিশ্বাস করে যখন আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াই, ঈশ্বর এই বিশ্বাসের উত্সর্গ গ্রহণ করেন এবং আমাদেরকে আলিঙ্গন করেন৷ কেন? কারণ অন্য কিছু নয়, শুধু তাঁর “বলি উত্সর্গ” দ্বারা আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিস্পাপ ও ধার্মিক হই৷
ঈশ্বর আমাদেরকে গ্রহণ করেছেন, আমরা তাঁকে আমাদের বিশ্বাস উত্সর্গ করেছি যে, যীশু আমাদের ত্রাণকর্তা৷ অন্যকথায়, ঈশ্বর যীশুর আত্মত্যাগ গ্রহণ করেছেন৷ এছাড়াও তিনি আমাদেরকে খ্রীষ্টেতে গ্রহণ করেছেন৷ কারণ আমাদের সমস্ত পাপ উত্সর্গের নিমিত্ত অতিক্রান্ত হয়েছে৷ কারণ আমাদের পাপের বিচার এই উত্সর্গের অধীনে থাকার জন্য আমরা পাপহীন হয়েছি৷ এটা ঈশ্বরের বিচার এবং তাঁর ধার্মিকতা৷ তাছাড়া এটা ঈশ্বরের প্রেম এবং তাঁর যথার্থ পরিত্রাণ৷
 
 
আমরাও হেবলের বিশ্বাস উত্সর্গ করি
 
বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, ঈশ্বর সন্তুষ্ট হয়ে হেবলের বিশ্বাসপূর্ণ উত্সর্গ গ্রহণ করেছিলেন৷ তাহলে সেই উত্সর্গের বিশ্বাস কি ছিল, যা ঈশ্বর আজ আমাদের থেকে গ্রহণ করবেন? এখন আমরা আমাদের হৃদয়ে বিশ্বাস করি যে, যীশু আমাদের ত্রাণকর্তা, আর যার জন্য তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের পক্ষে বিচারিত হয়েছেন, আর যখন আমরা ঈশ্বরকে এই বিশ্বাস প্রদান করি, এই বিশ্বাস উত্সর্গের দ্বারা তিনি আমাদেরকে গ্রহণ করেন৷ তিনি আমাদের কর্মে যত ত্রুটি আছে তা অগ্রাহ্য করেছেন, কারণ আমাদের সমস্ত পাপ যীশুতে চলে গেছে এবং যীশু আমাদের স্থলে বিচারিত হয়েছেন, পিতা ঈশ্বর আমাদের মধ্যে নয়, বরং তাঁর পুত্রের মধ্যে আমাদের পাপ খুঁজে পেয়েছেন৷ ঈশ্বর এভাবে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর পুত্রে স্থানান্তর করেছেন, আমাদের স্থলে তাঁকে বিচারিত করেছেন৷ তিন দিনের পর তিনি তাঁকে মৃত্যু থেকে উঠিয়েছেন এবং তিনি তাঁকে তাঁর দক্ষিনে বসিয়েছেন৷
যারা এতে বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাদের সবাইকে রক্ষা করবেন৷ তিনি আমাদের বিশ্বাসের উত্সর্গ গ্রহণ করেছেন৷ যীশু খ্রীষ্ট ব্যতীত আমরা কখনই ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াতে পারি না৷ কিন্তু যীশু আমাদের নিশ্চিত ত্রাণকর্তা হওয়ার কারণে আমরা এই বিশ্বাস উত্সর্গের সহিত ঈশ্বরের কাছে যেতে পারি৷ এবং এই উত্সর্গের কারণে ঈশ্বর আমাদেরকে গ্রহণ করতে পারেন৷ এই সত্যে কি আমাদের পরিপূর্ণ বিশ্বাস আছে? অবশ্যই আছে!
এখন আমরা প্রকৃত অর্থে পাপহীন হয়েছি৷ কারণ আমাদের পাপসমূহ যীশুতে চলে গেছে, আমরা যারা পাপহীন হয়েছি ঈশ্বর আমাদেরকে শুক্ল বস্ত্র পরিয়েছেন৷ তিনি আমাদেরকে ধার্মিক করেছেন৷ আমাদের প্রভু যেমন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, “যে জয় করে, সে তদ্রূপ শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হইবে; এবং আমি তাহার নাম কোন ক্রমে জীবন-পুস্তক হইতে মুছিয়া ফেলিব না” তিনি তাঁর দূতগণের সম্মুখে আমাদের নাম স্বীকার করেছেন৷
ঈশ্বরের সার্দ্দিস্থ মন্ডলীতে অল্প কয়েকজন ছিল, যারা শুক্ল পরিচ্ছদে ঈশ্বরের সাক্ষাতে গমনাগমন করত৷ এদের কেউই ঈশ্বরের দাস ছিলেন না, তাঁর সন্তান ও পবিত্রগণ ছিলেন৷
ঈশ্বর হেবলের নৈবেদ্য গ্রাহ্য করলেন৷ এছাড়াও তিনি হেবলকেও গ্রহণ করলেন৷ কিন্তু যদি উত্সর্গ পরিপূর্ণ না হয়, তাহলে ঈশ্বর নৈবেদ্য গ্রহণ করেন না৷ একারণে ঈশ্বর কয়িনকে ও তার নৈবেদ্যকে গ্রাহ্য করেন নি৷ কেন ঈশ্বর কয়িনকে ও তার নৈবেদ্যকে গ্রাহ্য করেন নি? তিনি সেগুলো গ্রাহ্য করেন নি, কারণ কয়িনের জীবনের নৈবেদ্য প্রায়শ্চিত্তের রক্ত দ্বারা প্রস্তুতিকৃত ছিল না৷ বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, কয়িন নৈবেদ্য হিসাবে নিজের পরিশ্রমের ফসল, ভূমির ফল উত্সর্গ করেছিল৷ সাধারনভাবে সে তার শস্য উত্সর্গ করেছিল৷ এগুলো হয়তো ছিল, তরমুজ, শস্য অথবা আলু যা নিঃসন্দেহে পরিচ্ছন্ন এবং ভালোভাবে প্রস্তুতিকৃত ছিল, কিন্তু ঈশ্বর এ ধরণের নৈবেদ্য গ্রাহ্য করেন নি৷
কয়িনের এই নৈবেদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ আছে, যা আজকের খ্রীষ্টিয়ানদেরকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই বুঝতে হবে৷ কিন্তু আজকে পৃথিবীর অল্প সংখ্যক লোক ঈশ্বরের হৃদয়কে জানে, অনেকেরই কোনো ধারণা নেই, এমনকি তারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না যে, তারা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরকে কয়িনের নৈবেদ্য প্রদান করেছে৷
যখন একজন ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়ায়, প্রথমেই তাকে তার (নারী/পুরুষ) পাপের কারণে মৃত্যু এবং নরকযোগ্য হিসাবে জানতে হবে৷ আপনি কি ঈশ্বরের সম্মুখে এটা জেনেছেন যে, আপনার পাপের জন্য আপনি নরকগামী এবং নরকে যেতে বাধ্য? যদি আপনি এটা স্বীকার না করেন, তাহলে আপনার যীশু যে পাপীদের মুক্তিদাতা এটা বিশ্বাস করার কোনো প্রয়োজনই নেই৷ প্রভু আমাদেরকে বলেন, “সুস্থ লোকেদের জন্য চিকিত্সকের প্রয়োজন নেই, কিন্তু অসুস্থ লোকের জন্য আছে৷” সেই আত্মাদের জন্য আমাদের প্রভুর প্রয়োজন, যারা পাপের যোঁয়ালির অধীনে দুঃখভোগ করছে, কিন্তু যারা নিজেদের পাপ জানেনা এবং নূতন জন্ম না পেয়েও নিজেদেরকে পাপহীন হিসাবে দাবি করে তাদের জন্য নয়৷
মৌলিকভাবে প্রত্যেকে এক একজন পাপী৷ অতএব, ঈশ্বর মানবজাতির বিচার করবেন এবং মানবজাতি ঈশ্বরের ক্রোধের এই বিচারের সম্মুখীন হতে বাধ্য৷ অন্যথায়, আপনি এবং আমি সবাই দন্ডিত হয়ে ধ্বংস হব৷ কিন্তু আমাদেরকে ধ্বংস তথা নরকে পাঠানো এড়াতে প্রভু যর্দ্দন নদীতে তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের স্থলে ঈশ্বরের বিচার গ্রহণ করেছেন৷ এ কারণে প্রভু ঈশ্বরের সম্মুখে আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করেছেন৷ অতএব শুধু যারা প্রকৃতভাবে ঈশ্বরের সম্মুখে পাপ করে এবং নিজেদেরকে পাপী হিসাবে স্বীকার করে এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস করার প্রয়োজন বোধ করে, ঈশ্বর তাদেরই ত্রাণকর্তা হন৷ 
 
 
যে বিশ্বাস আমাদেরকে পরিত্রাণের শুক্ল বস্ত্রে আবৃত করে
 
বাইবেল যেভাবে আমাদেরকে বলে, “কেননা প্রত্যেক প্রাণীর রক্তই প্রাণ, তাহাই তাহার প্রানস্বরূপ,” মানুষেরও জীবন তার রক্তের মধ্যে৷ আমাদের পাপের কারণে, আমরা অবশ্যই মরব৷ তাহলে যীশু কেন ক্রুশে মরেছেন? তিনি ক্রুশে মরেছেন কারণ তিনি তাঁর নিজের উপরে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং পাপের বেতন মৃত্যু, তাই যীশু আমাদের স্থলে মূল্য পরিশোধ জীবনের রক্ত সেচন করেছেন এবং মরেছেন৷ এই সত্যের সাক্ষ্য বহন করতে তিনি ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন, রক্ত সেচন এবং আমাদের পরিবর্তে ক্রুশে মরেছিলেন৷ 
বাইবেল যেমন আমাদেরকে বলে, “তিনি আমাদের অধর্মের নিমিত্ত বিদ্ধ, আমাদের অপরাধের নিমিত্ত চূর্ণ হইলেন৷” যীশু আমাদের অধর্ম এবং অপরাধের কারণে মরেছেন৷ অতএব, তাঁর মৃত্যু আমাদেরই মৃত্যু এবং তাঁর পুনরুত্থান আমাদেরই পুনরুত্থান৷ আপনি কি এতে বিশ্বাস করেন?
যীশু আমাদেরকে রক্ষা করতে জগতে এসেছিলেন এবং আমাদের পাপ মুছে দিতে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন৷ এছাড়াও যীশু ক্রুশারোপিতও হয়েছিলেন৷ লোকেরা তাঁকে অবজ্ঞা করেছিল, তাঁর কাছ থেকে তাঁর কাপড় লুট করে নিয়েছিল, তাঁর মুখে থুথু দিয়েছিল এবং তাঁর গালে চড় মেরেছিল৷ কেন যীশু যিনি ঈশ্বর, থুথু এবং চড়ের সম্মুখীন হয়ে অপমানিত হয়েছিলেন? আমাদের পাপের জন্য আমাদের প্রভু অবজ্ঞাত হয়েছিলেন৷ অতএব, প্রভুর মৃত্যু এবং পুনরুত্থান আমাদের প্রত্যেকের মৃত্যু এবং পুনরুত্থান৷ পৃথিবীর কোনো ধর্মীয় নেতা আমাদের পাপ তুলে নেন নি৷ বুদ্ধ কিম্বা মোহম্মদ কেউই আমাদের পাপের জন্য তাদের জীবন দেন নি৷ 
কিন্তু ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্ট যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের পাপ নিজের উপরে তুলে নেবার জন্য এবং আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য এই পৃথিবীতে এসেছিলেন৷ এবং আমাদেরকে মৃত্যু, বিচার, ধ্বংস ও অভিশাপ থেকে মুক্ত করার জন্য তিনি নিজের পাপ সমর্পণ করলেন৷ 
অতএব, বাইবেল আমাদেরকে যেভাবে বলে, “কেননা তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ, সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ,” যীশুর বাপ্তিস্ম যা আমাদের থেকে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছে, এতে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা অবশ্যই আমাদের পাপের প্রতিকার করব এবং ধার্মিকতার বস্ত্র পরিহিত হব৷ যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাসই আমাদেরকে মৃত্যু ও পুনরুত্থানে বিশ্বাসযুক্ত করে৷
আমরা যে তাঁর সন্তানে বিশ্বাস করি এই বিশ্বাসকে দেখে ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর সন্তান করেছেন৷ এটাই গ্রহণীয়তা৷ আমরা যে বিশ্বাস ঈশ্বরের সম্মুখে উত্সর্গ করি, সেটা দেখে তিনি আমাদেরকে গ্রহণ করেন৷ তিনি আমাদের কাজ দেখে আমাদেরকে গ্রহণ করেন না, কিন্তু তিনি সকলের ত্রাণকর্তা হিসাবে যিনি আমাদের পাপ বহন করেছেন, আমাদের স্থলে বিচারিত হয়েছেন এবং পুনরায় মৃত্যু থেকে উঠেছেন, সেই ঈশ্বরের পুত্রে আমাদের বিশ্বাস দেখে আমাদেরকে তাঁর সন্তান হিসাবে গ্রহণ করেন৷
আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এটাই সত্য বিশ্বাস৷ আমরা আমাদের নিজেদের কাজের দ্বারা মুক্ত হই নি, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের কাজের দ্বারা আমরা শুক্ল বস্ত্রে আবৃত হয়েছি৷ কারো কাজ ১০০ ভাগ পরিস্কার হতে পারে না৷ আমাদের হৃদয়কে পাপমুক্ত করতে হলে অবশ্যই আমাদের নিজেদেরকে ব্যর্থ পরিশ্রম পরিহার করতে হবে এবং পরিবর্তে ত্রাণকর্তা হিসাবে প্রভুকে গ্রহণ করতে হবে৷ একমাত্র এতে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা শুক্ল বস্ত্রে আবৃত হতে পারি৷
তাহলে আমাদের নাম জীবন পুস্তকে লেখা হবে এবং দূতগণের সম্মুখে আমরা ঈশ্বরের দ্বারা উত্কৃষ্ট বলে স্বীকৃত হব৷ যীশু নিজেই আমাদেরকে ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে চিনবেন৷ বলবেন, “আমি তোমাকে মুক্ত করেছি, তুমি ধার্মিক, কারণ আমি তোমার সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি৷” প্রকাশিত বাক্যের পূর্ব আলোচিত মূল অনুচ্ছেদের এটাই আসল অর্থ৷ যখন আমরা ঈশ্বরের মন্ডলীতে আসি, তখন আমাদের প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে এবং শুধুমাত্র তাঁর মন্ডলীতে প্রায়শ্চিত্ত পাওয়া যায়৷
পিতা ঈশ্বর তাঁর পুত্রের উপরে আমাদের বিশ্বাস দেখে আমাদেরকে গ্রহণ করেছেন৷ আমাদের দুর্বলতা এবং অপরাধ থাকার কারণে আমরা নিয়মিতভাবে বিপথগমন না করে এবং অবিরত দুর্বলতায় পতিত হই, কিন্তু তা সত্ত্বেও ঈশ্বর তাঁর পুত্রেতে আমাদের বিশ্বাসের দিকে তাকান এবং এই বিশ্বাসের কারণে তিনি যেমন তাঁর নিজের পুত্রকে গ্রহণ করেছেন তেমনিভাবে আমাদেরকেও গ্রহণ করেছেন৷ আমাদের প্রভু আমাদেরকে রক্ষা করেছেন৷ 
আর তিনি আমাদেরকে শুক্ল বস্ত্রে আচ্ছাদিত করেছেন৷ হৃদয়ের পাপহীনতার বিশ্বাসই শুক্ল বস্ত্রে আচ্ছাদনের প্রমাণ৷ প্রভু আমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, যখনই আমরা আমাদের হৃদয়কে শুক্ল বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত করে তাঁর সম্মুখে দাঁড়াই, তিনি আমাদের দেহকে ঐশ্বরিক দেহতে রূপান্তরিত করেন৷
এই পৃথিবীতে, ঈশ্বরের মন্ডলীতে ধার্মিক এবং ঈশ্বরের দাসগণ পাওয়া যেতে পারে৷ এই মন্ডলীতে একই তারা যারা শুক্ল বস্ত্র পরিহিত, এবং ঈশ্বর তাঁর মন্ডলী ও তাঁর দাসগণের মাধ্যমে কাজ করেন৷
আসুন পুনরায় প্রকাশিত বাক্য ৩:৫ পদ পাঠ করি, “যে জয় করে, সে তদ্রূপ শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হইবে; এবং আমি তাহার নাম কোন ক্রমে জীবন-পুস্তক হইতে মুছিয়া ফেলিব না, কিন্তু আমার পিতার সাক্ষাতে ও তাঁহার দূতগণের সাক্ষাতে তাহার নাম স্বীকার করিব। ”
উপরের অনুচ্ছেদে ঈশ্বর আমাদেরকে একটি শর্ত প্রদান করেছেন, যা হল, “যে জয় করে” সে শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হবে৷ আমরা অবশ্যই জয় করব৷ কিন্তু যারা বিশ্বাস করে যে, প্রতিদিনের পাপ দৈনিক অনুতাপের স্বীকারোক্তির দ্বারা ক্ষমা হয়ে যায়, তারা যদিও যীশুকে বিশ্বাস করে, তারা এমন লোক নয় যারা শয়তানের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধে জয়ী হয় বরং তারা পরাজিত হয়৷ এরূপ বিশ্বাসের লোকেরা কখনও শুক্ল বস্ত্র পরিধান করতে পারে না৷ তারা কখনই ধার্মিক হতে পারে না৷
একমাত্র তারাই জয় করে, যারা প্রভুর পরিত্রাণের যথার্থ কার্যে বিশ্বাস করে৷ প্রভু ইতিমধ্যে আপনাকে এই বিশ্বাস দিয়েছেন যা, পবিত্রকরণ বা ধার্মিকিকরণ মতবাদের মত মতবাদ জয় করতে পারে৷ এছাড়া তাঁর সত্য সুসমাচার, জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদেরকে রক্ষা করেছেন, যাতে আমরা ভ্রান্ত সুসমাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হই, যা আমাদের কাছে প্রকৃত পরিত্রান আনয়ন করে না এবং শয়তান থেকে মুক্ত করে না৷ 
আমরা শুধু বিশ্বাসে আমাদের পাপ অর্পণ করব, বাস্তবভাবে আমাদের হৃদয়কে জানব যে, সত্যই আমাদের পাপ যীশুতে চলে গেছে৷ আমরাও মরেছি এবং তাঁর মৃত্যু ছিল আমাদের স্থলে প্রতিনিধিত্বস্বরূপ৷ আমরা অবশ্য আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদেরকে পুনরায় বাঁচাতে যীশু মৃত্যু থেকে উঠেছিলেন৷ যখন আমাদের এই বাস্তব সত্যের বিশ্বাস থাকে, ঈশ্বর আমাদের বিশ্বাসের দিকে তাকান, আমাদেরকে ধার্মিক গণিত করেন৷
ভিন্নভাবে এই বাক্যের অর্থ হল, “কিন্তু যত লোক তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন” (যোহন ১:১২)৷ লোকেদের যদি প্রকৃত যীশুর জ্ঞান না থাকে, তাহলে তারা শুধু মুখে “আমি যীশুতে বিশ্বাস করি” বললেই ঈশ্বরের সন্তান হতে পারে না৷ ঈশ্বরের বাক্য বলছে, “তাহারা রক্ত হইতে নয়, মাংসের ইচ্ছা হইতেও নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছা হইতে জাত৷” সেটাই ঠিক৷ একমাত্র বিশ্বাসের দ্বারাই ঈশ্বরের সন্তান হওয়া সম্ভব৷ এজন্য, আমরা অবশ্যই মিথ্যাবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব এবং জয়ী হব৷ এভাবে মিথ্যাবাদীদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করে যারা পাপ থেকে মুক্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই মাংসিক অভিলাষ জয় করে ঈশ্বরের সাথে গমনাগমন করে৷ অন্যকথায়, তারা অবশ্যই ঈশ্বরের ইচ্ছায় জীবনযাপন করে৷
তাহলে, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি? তাদের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা হল, যারা শুক্ল বস্ত্র পরিহিত তাদেরকে একত্রিত করা এবং তাঁর সুসমাচার প্রচার করা৷ ধার্মিকদের জন্য তাঁর ইচ্ছা হল, যদিও তারা বিচ্ছিন্নভাবে থাকে, তাদেরকে উপাসনা, প্রচার ও ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এবং পাপীদের কাছে সুসমাচার প্রচার করতে একত্রিত করবেন, যাতে তারাও শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হয়৷ আত্মার পরিত্রাণের জন্য এই কার্যের জীবনই ঈশ্বরের লোকেদের জীবন, তাঁর দাসগণের জীবন৷ 
যখন আমরা এরূপ জীবনযাপন করি, ঈশ্বর শুধু তাঁর “ধার্মিকতা” দ্বারাই আমাদেরকে আবৃত করবেন না বরং জাগতিক এবং স্বর্গীয় আত্মিক উন্নয়নের জন্য আমাদেরকে আশীর্বাদ প্রদান করবেন৷ আমাদের চতুর্দিকে যারা আছে, তাদের নিমিত্ত আমাদেরকে সুসমাচার প্রচারক তৈরী করবেন৷ সমস্ত ধার্মিক এবং তাদের চারপাশস্থ সবাইকে ঈশ্বর শুক্ল বস্ত্রে আবৃত করবেন৷ সত্য বাক্যে বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বর আমাদেরকে অসত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বলেছেন৷ আর যে ধার্মিকগণ এভাবে আত্মিক যুদ্ধে জয়লাভ করে, তিনি তাদেরকে শুক্ল বস্ত্র পরিধানের আশীর্বাদ করেছেন৷ ধন্য প্রভু!